ফ্ল্যাপে লিখা কথা
‘হিমু’কে অর্থাৎ হিমালয়কে কি আপনারা চেনেন? তার রহস্যময় জগত সম্পর্কে আপনাদের ধারণা কি? আপনাদের সাথে তার কি কখনো দেখা হয়েছে? অথবা আপনার কি কখনো মনে হয়েছে আমাদের সবার ভেতর একজন ‘হিমু’ বাস করে?
হুমায়ুন আহমেদ সেই হিমুকে বের করে নিয়ে এসেছেন-যে একই সঙ্গে খুবই চেনা আবার একেবারেই অচেনা? যে কখনো সত্যি কথা বলে না আবার কখনোই মিথ্যা কথা বলে না। কেমন করে তা সম্ভব? মূর্তিমান হিমু, হুমায়ুন আহমেদ সেই অসম্ভবকে সম্ভব করেন অবলীলায়। হুমায়ুন আহমেদের ‘হিমু’ বিষয়ক।
৩টি উপন্যাস
* এবং হিমু
* হিমুর হাতে কয়েকটি নীলপদ্ম
* হিমুর দ্বিতীয় প্রহর
নিয়ে হিমু সমগ্র দ্বিতীয় খন্ড হিমুর পরাবাস্তব জগতে আপনাদের সাদর আমন্ত্রণ।
ভূমিকা
হিমু সমগ্রের দ্বিতীয় খন্ড বের হচ্ছে। আমার আনন্দিত হওয়া উচিত। কিন্তু কেন জানি আনন্দিত হচ্ছি না, বরং খানিকটা বিষণ্ন বোধ করছি। বারবার মনে হচ্ছে যেদিন আমি থাকব না, সেদিন হিমুও থাকবে না। কবরের গভীর অন্ধকার হিমুকে আমি সঙ্গে নিয়ে যাব। অথচ এমন তো হবার কথা না। প্রকৃতিতে কিছুই ফুরায় না। সবকিছুই ফিরে ফিরে আসে। প্রতি বছর আকাশ অন্ধকার করে বর্ষা আসে, ফোটে কদম ফুল। প্রতি মাসে চাঁদ তার জোছনার দোকান খুলে বসে। কেউ জোছনা কেনে চড়া দামে এবং কেউবা প্রায় বিনামূল্যেই পেয়ে যায়।
প্রকৃতি যেমন সবকিছুই বারবার ফিরিয়ে আনে- সে কি হিমুকেও আবার আনবে? আগামীদিনের কোনো লেখক কি আবারও পৃথিবীতে তাকে ফিরিয়ে আনবেন? আবারও সে হেঁটে বেড়াবে পথে পথে?
আহা সে আসুক। এই ভয়ংকর সুন্দর পৃথিবীতে আমি না থাকলাম, সে থাকুক। তার চোখ দিয়েই আমি আবারও জোছনা দেখব। তার সঙ্গে ভিজব বর্ষার নবধারা জলে।
হুমায়ুন আহমেদ
১৩ ই নভেম্বর, ১৯৯৭
ধানমন্ডি, ঢাকা।