ফ্ল্যাপে লিখা কথা
সমকালীন কথাসাহিত্যিকদের মধ্যে হুমায়ূন আহমেদ এখন জনপ্রিয়তার শীর্ষে। গ্রন্থজগতের পরিসংখ্যান বিগত কয়েক বৎসর যাবত এই সত্য প্রতিষ্ঠিত করছেহ। এই কথাশিল্পীর সৃজনশীলতার ক্ষমতা ইতোমধ্যে প্রায় কিংবদন্তীতুল্য।
কিশো্রবয়সী থেকে বৃদ্ধ, স্বল্পশিক্ষিত থেকে বুদ্ধিজীবী পণ্ডিত-সকলেই তাঁর উপন্যাসের আগ্রহী পাটক, অথবা টেলিভিশনের পর্দায় তার কাহিনীর নাট্যরূপায়ণের বিমুগ্ধ দর্শক। কোন ক্ষমতায় এভাবে সকলকে কাছে টানেন হুমায়ূন আহমেদ? চিত্রল গতিময় সহজ ভাষাবিন্যাস। অভাবনীয় ঘটনা বিশ্বাসযোগ্যভাবে ঘটানোর মনোহারী কৌশল। কল্পনা হারর মেনে যায় এমন অকল্পনীয় বিদ্যুন্নিভ সংলাপ। এবং তাঁর কাহিনীতে ছড়ানো জীবন কখনোই আামদের চেনা মধ্যবিত্ত সমাজসত্যের বাইরে ছোটছুটি করে না। মধ্যবিত্ত -জীবনের আশা-নিরাশা, অনিশ্চিত এব দোলাচলপ্রবণ মূল্যবোধ, তার সামান্য লাভ ও সামান্য ক্ষতির বন্ধনে আততিময় অস্তিত্ব। হুমায়ূন আহমেদের যে কোনো উপন্যাসে ধারণ করে আছে তাঁর সৃজনীসত্তার মনন-কল্পনার এ সকল উপাদান। সাধারণ মানুষের কাতর জীবন চূর্ণকণায় ছড়িয়ে থাকে তাঁর লেখায়।
যখন প্রথম উপন্যাস ‘নন্দিত নরকে’ বোরোয়, তখন প্রথিতযশা অধ্যাপক ডক্টর শরীফ লিখেছিলেন, ‘হুমায়ূন আহমেদ বয়সে তরুণ, মনে প্রাচীন দ্রষ্টা , মেজাজে জীবন রসিক, স্বভাবে রূপদর্শী, যোগ্যতায় দক্ষ রূপকার। ভবিষ্যতে তিনি বিশিষ্ট জীবনশিল্পী হবেন এই বিশ্বাস ও প্রত্যাশা নিয়ে অপেক্ষা করব”। এভাবেই যাত্রা শুরু হয়েছিল হুমায়ূন আহমেদের। তারপর ক্রমাগত পথচলার প্রবাহে একের পর এক সাহিত্যকর্ম উপহার দিয়ে চলেছেন এ দেশের পাঠকসমাজকে। পণ্ডিত সমালোচক ও হৃদয়বান গল্পপ্রেমিক উভয়েরই প্রত্যাশা তিনি পূরণ করে চলেছেন।
একই সঙ্গে অতিপ্রজ অথচ শিল্পরুচিময় লেখক তাঁর মতো আর কেউ এই মুহূর্তে আছেন কিনা সন্দেহ। প্রতি বৎসর অব্যাহত গতিতে তাঁর ফসলের ডালা ভরে উঠেছে। প্রতীক প্রকাশনা সংস্থার আনন্দ ও গর্ব যে, হুমায়ূন আহমেদের উপন্যাস সমগ্র বিভিন্ন খন্ডে ক্রমান্বয়ে প্রকার করার দায়িত্ব সে নিতে পেরেছে।
উপন্যাস সমগ্র (৬ষ্ঠ খণ্ড)
* দিনের শেষে
* সমুদ্র বিলাস
* গৌরীপুর জংশন
* ময়ূরাক্ষী
* আমাদের সাদা বাড়ি
* বহুব্রীহি
* মন্ত্রসপ্তক
* নীল অপরাজিতা