“শ্রাবণ মেঘের দিন”বইটির প্রথমের কিছু অংশ:
নীতু বলল, আপা, আমার ভয় ভয় লাগছে ।
শাহানার চোখে চশমা, কোলে মােটা একটি ইংরেজি বই— The Psychopathic Mind. দারুণ মজার বই। সে বইয়ের পাতা উল্টাল। নীতুর দিকে একবারও না তাকিয়ে বলল, ভয় লাগার মত কোন পরিস্থিতির উদ্ভব হয়েছে বলে তাে মনে হচ্ছে না।
গা জ্বলে যাবার মত কথা । কি রকম হেড মিসট্রেস টাইপ ভাষা“ভয় লাগার মত কোন পরিস্থিতির উদ্ভব হয়েছে বলে তাে মনে হচ্ছে না।” অথচ পরিস্থিতি যথেষ্টই খারাপ। তারা দুজন একা একা যাচ্ছে। দুজন কখনাে একা হয় না, সঙ্গে পুরুষমানুষ কেউ নেই বলে নীতুর কাছে একা একা লাগছে। ঠাকরােকোনা স্টেশনে বিকেলের মধ্যে তাদের পৌঁছার কথা । এখন সন্ধ্যা, ট্রেন থেমে আছে । ঠাকরােকোনা স্টেশন আরাে তিন স্টপেজ পরে । যে ভাবে ট্রেন এগুচ্ছে, নীতুর ধারণা, পৌঁছতে পৌঁছতে রাত-দুপুর হয়ে যাবে। তখন তারা কি করবে? স্টেশনে বসে ভাের হবার জন্যে অপেক্ষা করবে? মেয়েদের বসার কোন জায়গা আছে কি? যদি না থাকে তারা কোথায় বসবে?
নীতু বলল, আপা, তুমি বইটা বন্ধ কর তাে।
শাহানা এই বন্ধ করল । চোখ থেকে চশমা খুলে ফেলল । শাহানার বয়স চব্বিশ । তার গায়ে সাধারণ একটা সূতির শাড়ি। কোন সাজসজ্জা নেই অথচ কি সুন্দর তাকে লাগছে! নীতু কিছুক্ষণের জন্যে ভয় পাওয়ার কথা ভুলে গিয়ে বলল, আপা, তােমাকে খুব সুন্দর লাগছে ।