“মিসির আলির অমীমাংসিত রহস্য”বইটির প্রথমের কিছু কথাা:
অসম্ভব সুন্দর একজন মানুষ । আজকাল তার সাথে আমার দেখাই হয় না । হঠাৎ হঠাৎ টেলিফোন করে গাঢ় স্বরে বলে- “কেমন আছিস রে পাগলা?” তৎক্ষণাৎ আমি আমার যৌবনে ফিরে যাই। আমার হারানাে যৌবন ফিরিয়ে দেবার ক্ষমতা অল্প যে ক’জন মানুষের কাছে আছে হাফিজুল কবির তাদের একজন। আপনি কি ভূত দেখেছেন স্যার? ইংরেজিতে যাকে বলে Spirit, ghost, astral body মানে প্রেতাত্মার কথা বলছি, অশরীরি… মিসির আলি প্রশ্নটির জবাব দেবেন কিনা বুঝতে পারছেন না। কিছু মানুষ আছে যারা প্রশ্ন করে, কিন্তু জবাব শুনতে চায় না। প্রশ্ন করেই হড়বড় করে কথা বলতে থাকে। কথার ফাঁকে ফাঁকে আবার প্রশ্ন করে, আবার নিজেই জবাব দেয়। মিসির আলির কাছে মনে হচ্ছে তার সামনের চেয়ারে বসে থাকা এই মানুষটি সেই প্রকৃতির । ভদ্রলােক মধ্যবয়স্ক। গােলাকার মুখে পুরুষ্ট গোঁফ। কুস্তিগীর কুস্তিগীর চেহারা। কথার মাঝখানে হাসার অভ্যাস আছে । হাসার সময় কোনাে শব্দ হয় না, কিন্তু সারা শরীর দুলতে থাকে। ওসমান গনি । নামের এই মানুষটির প্রধান বৈশিষ্ট্য অবশ্য নিঃশব্দে হাসার ক্ষমতা নয়, প্রধান বৈশিষ্ট্য হচ্ছে তাঁর নিচের পাটির একটি এবং উপরের পাটির দুটি দাঁত সােনা দিয়ে বাঁধানাে। যে যুগে রুট ক্যানালিঙের মতাে আধুনিক দন্ত চিকিৎসা শুরু হয়েছে সে যুগে কেউ সােনা দিয়ে দাঁত বাঁধায় না। এই ভদ্রলােক বাঁধিয়েছেন । ধবধবে সাদা দাঁতের মাঝে ঝকঝকে তিনটি সােনালি দাঁত। ‘কথা বলছেন না কেন স্যার, ভূত কি কখনাে দেখেছেন? ‘জ্বি না।’