“সাদা কালো” বইয়ের ভূমিকার অংশ থেকে নেয়া:
স্বাধীনতার ছত্রিশ বছর পরও বাংলাদেশের জনগণকে অবাধ নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য সংগ্রাম করতে হচ্ছে। বুকের তাজা রক্ত ঢেলে দিতে হচ্ছে রাজপথে। কিন্তু আন্দোলনে বিজয় অর্জন হলেই সুফল ভােগ করেছে একটা শ্রেণী, আর যারা রক্ত দিয়ে অর্জনটুকু এনেছিল তারা হয়ে যাচ্ছে অপাংক্তেয়। আজও ঘরে ঘরে হাহাকার, দুর্ভিক্ষ, ছিন্নমূল মানুষ আশ্রয় নেয় ফুটপাতে, রেল লাইনের পাশে, একদিকে সম্পদের প্রাচুর্য্য অপর দিকে লজ্জা নিবারণ বা সামাজিক নিরাপত্তার সামান্য ব্যবস্থা নেই। হতদরিদ্র মানুষ মানবেতর জীবনযাপন করতে বাধ্য হয়। সমাজে বিরাজ করছে বিরাট বৈষম্য ।
এদিকে লাখ টাকা খরচ করে একটি সন্তানকে স্কুলে পড়াচ্ছে, অপর দিকে স্কুলে পাঠান তাে দূরের কথা এক বেলা ভাত দিতে পারে না মা তার সন্তানকে। এ বৈষম্য আর কত সহ্য করা যায়? স্বাধীন বাংলাদেশে এভাবে মানুষের ভাগ্য নিয়ে খেলা আর কতদিন। বাংলার মানুষ কি গিনিপিগ? এদের নিয়ে কি শুধু এক্সপেরিমেন্ট চলবে? এদের সাহায্য করার নামে ধার দিয়ে, উচ্চহারে সুদ নিয়ে সেই সুদে ভাগ্য গড়েছে অনেকে। গরিবের সুদের টাকায় সামান্য কলেজ শিক্ষক থেকে ধনিক শ্রেণীর উচ্চাসনে উঠে বসেন কেউ কেউ কিন্তু যে দরিদ্র মানুষগুলাে ঋণ ও সুদ টেনে যাচ্ছে বছরের পর বছর তাদের ভাগ্য কি পরিবর্তন হয়েছে? তারাও কি দারিদ্র থেকে মুক্তি পেয়ে ধনীক শ্রেণীতে নাম লেখাতে। পেরেছে? না, তাদের ভাগ্যের চাকা ঘােরে নাই কিন্তু তাদের মেহনতের কামাই থেকে ভাগ্য গড়ে আন্তর্জাতিক পুরস্কার ও খ্যাতি নিয়ে ক্ষমতা ভােগ করছে কেউ কেউ। আর বাংলার জনগণকে নিয়ে শুধু পরীক্ষা নীরিক্ষাই চলছে।