বইটি সম্পর্কে কিছু তথ্যঃ
পৃথিবীর ইতিহাস সম্পর্কে অনেক তথ্য দেওয়া আছে বইটিতে যেমন- নর্মানদের অভিযান:
আমরা দেখেছি পঞ্চম থেকে সপ্তম শতকের মধ্যে জার্মান ও স্লাভ জাতির বর্বর গােষ্ঠীর কৃষিজীবী ও পশুপালক মানুষরা সারা ইউরােপে ছড়িয়ে পড়েছিল এবং রােম সাম্রাজ্যের ধ্বংসের উপর নতুন সামন্ত সভ্যতা গড়ে তুলেছিল। নয় এবং দশের শতকে ইউরােপে আবার নতুন করে বর্বর জাতির আক্রমণ ঘটে। এবার আক্রমণ করে নর্মানরা। নরওয়ে, সুইডেন, ডেনমার্কের অধিবাসীদের নর্থম্যান বা নর্মান বলা হত। নর্থম্যান মানে হল উত্তরের মানুষ। নরম্যানরা কৃষিজীবী হলেও উত্তরের বরফ ঢাকা অনুর্বর পার্বত্য জমিতে কৃষির সুযােগ ছিল না। তাই পশুপালন এবং মাছ ধরা এ দুটোই ছিল তাদের প্রধান উপজীবিকা। নর্মানরা ভাল জাহাজ নির্মাণ করতে পারত এবং তারা ছিল সমুদ্রে জাহাজ চালানাের কাজে অত্যন্ত দক্ষ। জলদস্যুতা ছিল নর্মানদের একটা প্রধান কাজ। জলদস্যু নর্মানরা ভাইকিং নামেও পরিচিত হয়েছিল। নবম শতাব্দীতে নর্মানরা অনেক দলে বিভক্ত হয়ে বিভিন্ন দিকে ছড়িয়ে পড়ে। সুইডেনবাসীরা রাশিয়ার উপর দিয়ে কৃষ্ণসাগর পর্যন্ত পৌছায়। নরওয়ের নর্মানরা জাহাজে করে আটলান্টিক পাড়ি দিয়ে আইসল্যান্ড ও গ্রিকনল্যান্ডে পৌছায়। একদল নর্মান শেষপর্যন্ত উত্তর আমেরিকাতেও পৌছেছিল। ডেনমার্কের নর্মানরা জার্মানির নদীগুলাের তীরে ঘাঁটি নির্মাণ করে এবং দক্ষিণ দিকে অগ্রসর হয়ে ফ্রান্সে গিয়ে পৌছায়। নর্মানরা যেখানেই যেত সেখানেই লুটতরাজ এবং অগ্নিসংযােগ করে ত্রাসের সঞ্চার করত। তারা মঠ এবং গির্জাগুলােকে আক্রমণ করে ধনরত্ন লুট করত। নর্মানদের ভয়ে। সমুদ্র এবং নদীর তীর থেকে লােকজন পালিয়ে দেশের অভ্যন্তরে যেতে শুরু করেছিল। নর্মানরা ফ্রান্সের উত্তরে এক স্থানে বাস স্থাপন করেছিল। এ জায়গাটির নাম হয়েছিল নর্মান্ডি। ১০৬৬ সালে নর্মান্ডির ডিউক প্রথম উইলিয়াম ইংল্যান্ড আক্রমণ করে দখল করে নেন। এ বিজয়ের নাম হয়েছে নর্মান বিজয়।