একাত্তরের বিশটি ভয়াবহ যুদ্ধ

৳ 200.00

লেখক
প্রকাশক
আইএসবিএন
(ISBN)
9789844321908
ভাষা বাংলা
পৃষ্ঠার সংখ্যা ১১২
সংস্কার 4th Printed, 2016
দেশ বাংলাদেশ

“একাত্তরের বিশটি ভয়াবহ যুদ্ধ”বইটির প্রথমের কিছু অংশ: কুষ্টিয়া যুদ্ধ মুক্তিযুদ্ধের সূচনা পর্বে কুষ্টিয়ায় সশস্ত্র গণঅভ্যুত্থান ইতিহাসের উজ্জ্বলতম দৃষ্টান্ত হিসাবে বিবেচিত হবে। কুষ্টিয়ায় উত্তাল জনতার গণবিদ্রোহ যাঁরা সেদিন সচক্ষে দেখেছেন—তারা আমার সাথে একমত হবেন—এত বিদ্রোহ কেউ কখনাে দেখেনি। হাজার হাজার জনতা ঢাল, সড়কি বল্লম নিয়ে যুদ্ধ শুরু করার প্রস্ততি নিলাে। গগনবিদারি জয়বাংলা শ্লোগানে আকাশ বাতাস মুখরিত হয়ে উঠলাে। আধুনিক অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত পাকিস্তান সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে সাহসী তরুণেরা ও বাঙালী সৈনিকেরা অমিত তেজে অসীম সাহসিকতার সাথে যুদ্ধে অবতীর্ণ হলাে। মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা ধরে যেসব মুক্তিযােদ্ধারা সেদিন স্বাধীনতার জন্য আত্মবলিদানের মহান প্রত্যয়ে-সুমহান দেশ প্রেমের অংগিকারে সংগ্রামী মানুষের কাতারে সামিল হয়েছিলেন—ইতিহাসে তাদের অনেকের নামই কখনাে উল্লেখ থাকবে না—তবু সেই মহাজাগরণের অবিস্মরণীয় মুহুর্তেজাতির ক্রান্তিলগ্নে দেশের চরম দু’দিনে অস্ত্র হাতে যারা লড়াই করেছিলেন—ইতিহাস ব্যর্থ হলেও—তাঁরা অনাদিকাল পর্যন্ত বাঙালী জাতির ইতিহাসে এক অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে থাকবে। পাকিস্তান সেনাবাহিনীর যুদ্ধ পরিকল্পনা অপারেশন সার্চ লাইট’ অনুসারে ২৫ মার্চ রাতে যশাের সেনানিবাস থেকে ২৭ বেলুচ রেজিমেন্টের এক কোম্পানী সৈন্য কুষ্টিয়া শহরে এসে অবস্থান গ্রহণ করে। পাকবাহিনী কুষ্টিয়া শহরে ত্রিশ ঘণ্টার জন্য সান্ধ্য আইন জারি করে এবং টহল দিতে থাকে। | পাকসেনাদের অধিনায়ক ছিলাে মেজর শশায়েব। ক্যাটেন শাকিল, ক্যাপটেন সামাদ ও লেঃ আতাউল্লাহ শাহ মেজর শােয়েবেব অধীনস্থ অফিসার হিসেবে এই কোম্পানীর সাথে কুষ্টিয়ায় অবস্থান করছিলাে। পাকবাহিনীর সঙ্গে ছিলাে ১০৬ এম এম জীপ আরােহিত রিকয়েলেস রাইফেল, ভারী ও হালকা চাইনিজ মেশিনগান, স্বয়ংক্রিয় রাইফেল, শক্তিশালী বেতার যন্ত্র এবং প্রচুর পরিমাণ গােলাবারুদ। ২৫শে মার্চ রাতে পাকবাহিনী কর্তৃক ইপিআর বাহিনীর আক্রান্ত হওয়ার খবর এবং কুষ্টিয়ায় পাকসেনাদের আগমনের খবর চতুর্দিকে ছড়িয়ে পড়ে। ইপি আর (বর্তমানে বি ডি আর)-এর যশাের সেক্টরের নিয়ন্ত্রণাধীনে ৪ নং-উইং এর সদর দপ্তর অবস্থিত ছিলাে চুয়াডাংগা মহকুমা শহরে। মেজর এম, এ, ওসমান চৌধুরী (বাঙালী বর্তমানে অবসরপ্রাপ্ত লেঃকর্ণেল) ৭১ সালের ফেব্রুয়ারী মাসে পশ্চিম পাকিস্তান থেকে বদলি হয়ে উইং কমাণ্ডারে দায়িত্বভার গ্রহণ করেন। ক্যাপটেন এ, আর, আযম চৌধুরী (বাঙালী-বর্তমানে লেঃ কর্ণেল) ও ক্যাপটেন সাদেক (পাঞ্জাবী) সহকারী অধিনায়ক ছিলেন। পাঁচটি কোম্পানী ও একটি সাপের্ট প্লাটুনের সমন্বয়ে গঠিত ছিলাে ৪ নং–উইং। প্রত্যেকটি কোম্পানী প্রয়ােজনীয় অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত ছিলাে।

মেজর রফিকুল ইসলাম ১৯৪৬ সালে কুষ্টিয়া জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৬৯ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রসায়নশাস্ত্রে অনার্স ও এম এস সি পাশ করে কিছুদিনের জন্য তিনি অধ্যাপনা করেন। ২৬ মার্চ স্বাধীনতা যুদ্ধ আরম্ভ হলে তিনি মুক্তিযুদ্ধে যােগ দেন এবযুদ্ধ চলাকালে ইষ্টবেঙ্গল রেজিমেন্ট কমিশন লাভ করেন। ১৯৮১ সালের নভেম্বর মাসে লেখ বাংলাদেশ সেনাবাহিনী থেকে অবসর প্রাপ্ত হন।


বই সম্পর্কে কোন জিজ্ঞাসা বা মতামত থাকলে আমাদেরকে জানান
শেয়ার করুন

লেখকের অন্য বইসমূহ