“তাও তে চিং সহজিয়া পথ” বইয়ের ফ্ল্যাপের কথাঃ
লাও ৎস নামের মানে হচ্ছে ‘বৃদ্ধ-তরুণ’ । লাও ৎস-এর দর্শন মানেই ‘সহজিয়া দর্শন’। একটি সহজ-সরল, নির্ভেজাল জীবনবােধের প্রবক্তা হিসেবে তাকে সহজেই চিহ্নিত করা যায়। তাও মানে এমন এক সার্বভৌম সত্তা যাকে সংজ্ঞার্থের মধ্যে ধরা যায় না। তাওকে বিদ্যাবুদ্ধি দিয়ে অর্জন করাও সম্ভব নয়। তাও বুদ্ধির অতীত। কেবল সজ্ঞা ও হৃদয়বােধ দিয়ে অনুভব করা যায় তাকে।
৮১টি অনুচ্ছেদে বিভক্ত প্রায় পাঁচ হাজার চীনা অক্ষরের সমন্বয়ে রচিত তাও তে চিং বিভিন্ন দেশে অনেক ভাষায় প্রকাশিত হয়েছে।
ভূমিকাঃ মহান চীনা দার্শনিক লাও ৎস রচিত ক্লাসিক বই তাও তে চিং-এর দ্বিতীয় সংস্করণ প্রকাশিত হচ্ছে দেখে ভালাে লাগছে। মনের শান্তিই বড় শান্তি। মনে শান্তি না থাকলে দেহেও স্বস্তি আসে না। আত্মা হয়ে ওঠে বিক্ষিপ্ত। তাও অন্তরে শান্তি প্রতিষ্ঠার দর্শন।
এই দর্শনে চেষ্টার ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। বলা হয়েছে, তুমি নিচেষ্ট হও। চিন্তা ত্যাগ করাে। চিত্তে নিবিষ্ট হও তবেই পাবে প্রশান্তি। নিজেকে কোনাে ডগমার শর্তে আবদ্ধ না করতে উৎসাহিত করা হয়েছে। জীবনের যেসব অর্জন ইগােকে শক্তিশালী করে সেসব থেকে নিজেকে সরিয়ে রাখার কৌশলও ব্যক্ত হয়েছে তাও দর্শনে। তাও দর্শন জীবনের গভীরতর সন্তুষ্টির কথা বলে। মনে করে সন্তুষ্ট জীবনই সফল জীবন। তাও দর্শন বলে—গভীর প্রশান্তিময় চিত্তই মানুষের বড় অর্জন। এই বইয়ের যে কোনাে একটি পর্ব পড়ে চোখ বন্ধ করে নিজের মনের দিকে তাকালে চিত্ত প্রশমিত হতে পারে। এই ওষুধি-ক্ষমতা বইটির আছে বলেই পৃথিবীব্যাপী অসংখ্য ভাষায় প্রকাশিত হয়েছে।
বইটি থেমে থেমে পড়া যেতে পারে। বিটুইন দ্যা লাইন’ মানে বাক্যের ফাঁকে ফাঁকে, শব্দের মাঝখানে সংগুপ্ত হয়ে আছে যেসব অর্থ, যেসব কথা, তা অনুভব করতে হবে। বেশি কিছু না, প্রয়ােজন সামান্য অনুধ্যান।
এই বইয়ের দ্বিতীয় সংস্করণ প্রকাশ করার জন্য বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক কবি হাবীবুল্লাহ সিরাজী ও পরিচালক ড. জালাল আহমেদকে ধন্যবাদ জানাই। ধন্যবাদ জানাই বাংলা একাডেমি প্রেসের ব্যবস্থাপক সমীর কুমার সরকার, সহপরিচালক ইমরুল ইউসুফ ও সহপাণ্ডুলিপি সম্পাদক মনি হায়দারকে। সহকর্মী আবু ইকবাল ও মােহাম্মদ মীর হােসেনকে সহযােগিতার জন্য কৃতজ্ঞতা জানাই।