এই বইটি মুলত ঢাকা নগরীতে মুক্তিবাহিনীর গেরিলাদের বিভিন্ন অপারেশনের একটি সংক্ষিপ্ত ইতিবৃত্ত। বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে মুক্তিবাহিনী, মুজিব বাহিনী ও মুক্তি ফৌজের অগ্নিসেনারা যে ভূমিকা পালন করে তা ইতিহাসের ভাস্বয় হয়ে থাকবে। না না খাত বেয়ে না না রূপে পরিচালিত হয়েছে মুক্তি সেনানীদের স্বাধীনতা সংগ্রাম। এদের মধ্যে কারো অবদান কারো চেয়ে কম নয়। এই বইতে লেখক প্রধানত : হানাদার শাসক অধিকৃত রাজধানী ঢাকা নগরীতে মুক্তি বাহিনীর গেরিলাদের বড় ধরনের সব অপারেশনের কাহিনী তুলে ধরেছে। এর সময় কাল ১৯৭১ সালের জুলাই মাস থেকে ১৬ ডিসেম্বর জেনারেল নিয়াজীর আত্মসমর্পনের দিন পর্যন্ত। বাংলাদেশের আর সব এলাকার মত ঢাকা নগরিতেও গেরিলারা চালিয়েছে নানা ধরনের রেইড, করেছে এ্যাম্বুস। সংগ্রামেরর প্রয়োজনে ব্যাংক থেকে ছিনিয়ে নিয়েছে তহবিল। এসবের সংখ্যা বহু। ঢাকা ছিলো হানাদার পাক বাহিনীর বৃহত্তম ছাউনী। ঢাকা ছিলো অধিকৃত বাংলাদেশের দখলদার পাক শাসক ও তাদের সহযোগীদের রাজনৈতিক কার্যক্রমের প্রধান কর্ম কেন্দ্র। গেরিলাদের ছিলো তাই ঢাকায় প্রবেশ খুবই কঠিন। সেই ঢাকায় গেরিলা একের পর এক যে দু:সাহসিক অপারেশন চালিয়ে গেছে তা সত্যিই অতুলনীয়। এরা অনেকেই পশ্চিমবঙ্গ থেকে ট্রেনিং করে এসে অনেককে ট্রেনিং দিয়েছে এবং সাধারণ মানুষের সাথে তাদের মতো মিসে থেকে সয়মত কঠিন এর চেয়েও কঠিন ভাবে বিভিন্ন অপারেশন সফল করেছে। এই গেরিলারা একজন হাইকমান্ডের অধিনে বিভিন্ন ইউনিটে বিভক্ত হয়ে কাজ করতো। তারা শুধু বিস্ফোরক ও আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে অপারেশন করাই নয়, তাদের আরো অনেক দায়িত্ব ছিল। যেমন:
১. প্রয়োজনীয় তথ্যাদি হেডকোয়ার্টারে পাঠিয়ে দেয়া,
২. বাংলাদেশ বাহিনীর পক্ষে গোয়েন্দাগিরি করা,
৩. বিশ্বজনমত সংগঠনের সহায়তা করা,
৪. অধিকৃত এলাকার জনগণের মনোবলকে সদা উজ্জীবিত রাখা।