“শতবর্ষ পরে ফিরে দেখা ইতিহাস বঙ্গভঙ্গ ও মুসলিম লীগ” বইটির ফ্ল্যাপ এর লেখাঃ
অবিভক্ত ভারতের ইতিহাসে দুটি মাইলফলক অধ্যায় হলাে ১৯০৫ সালের বঙ্গভঙ্গ এবং ১৯০৬ সালে ঢাকায় মুসলিম লীগ প্রতিষ্ঠা। ইতিহাসের এই অধ্যায় দুটি পরস্পর ওতপ্রােতভাবে জড়িত। ১৯০৫ সালের লর্ড কার্জনের বঙ্গভঙ্গ ছিল একটি প্রশাসনিক পদক্ষেপ ঢাকাকে রাজধানী করে পূর্ববঙ্গ ও আসামকে নিয়ে নতুন প্রদেশ সৃষ্টির ফলে মুসলিমপ্রধান পূর্ববঙ্গের বহুমুখী উন্নয়নের দ্বার উন্মােচিত হয়। একই সঙ্গে উন্মােচিত হয় চট্টগ্রাম বন্দর বিকাশের পথ। বাংলার হিন্দু উচ্চবিত্ত, জমিদার ও মধ্যবিত্ত এই বঙ্গভঙ্গের বিরুদ্ধে আন্দোলনে ঝাপিয়ে পড়ে। পূর্ববঙ্গের আপামর মুসলিম জনসাধারণ নবাব সলিমুল্লাহর নেতৃত্বে ছিল বঙ্গভঙ্গের পক্ষে। এখান থেকে শুরু হয় বাংলার হিন্দু-মুসলমান পরস্পর বিপরীতমুখী যাত্রা। বঙ্গভঙ্গের পটভূমিতে দাঁড়িয়ে নবাব সলিমুল্লাহর নেতৃত্বে ১৯০৬ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় সর্বভারতীয় মুসলিম লীগ। এটাই ভারতীয় মুসলমানদের প্রথম রাজনৈতিক সংগঠন। প্রতিবেশী হিন্দু উচ্চবিত্ত, জমিদার আর মধ্যবিত্তের প্রবল বিরােধিতা সত্ত্বেও এই দল স্বতন্ত্র মুসলিম জাতিসত্তার আন্দোলন সংগ্রামকে এগিয়ে নিয়ে যায়। যার চূড়ান্ত ফলশ্রুতি ১৯৪৭ সালের ভারত বিভাগ। সৃষ্টি হয় পাকিস্তান ও ভারতের। পাকিস্তানি শাসক ও এলিট সমাজের বিরুদ্ধে জনগণের । একটানা আন্দোলন সংগ্রাম এবং চূড়ান্ত পর্যায়ে সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে পূর্ব পাকিস্তানের সীমা ও জনগােষ্ঠীকে ধরেই প্রতিষ্ঠিত হয় বাংলাদেশ।