ফ্ল্যাপে লিখা কথা
মুহম্মদ জাফর ইকবাল এদেশের একজন শক্তিমান ও জনপ্রিয় লেখক। চমৎকার গল্প বলার ক্ষমতা, অপূর্ব বর্ণনাভঙ্গি, ভাষার যাদু, সেইসঙ্গে একটি সত্যিকার আধুনিক সংবেদনশীল সংস্কারমুক্ত ও বিজ্ঞানবিশ্বাসী মন; মানবমুখী এবং জীবন সম্পর্কে ইতিবাচক ও আশাবাদী দৃস্টিভঙ্গি তাঁকে আমাদের সময়ের একজন প্রধান সাহিত্যশিল্পীর মর্যাদায় অধিষ্ঠিত করেছে। শুধু ছোটদের কাছেই নয়, বড়দের কাছেও তাঁর রচনা প্রায় একইরকম সমাদৃত।
নিষ্ঠাবান শিক্ষাব্রতী, সমাজসচেতন বিজ্ঞানী, সাহসী ও তীক্ষ্ণ কলাম-লেখক ইত্যাদি বহুধা পরিচয়ে তিনি আজ আমাদের সামনে সমুপস্থিত। উনিশশো সত্তরের দশকে কপোট্রনিক সুখদুঃখ নামক বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনী নিয়ে সেই যে তাঁর আবির্ভাব, তারপর থেকে দাপটের সঙ্গে তিনি আমাদের সাহিথ্যের বিভিন্ন শাখায় রাজত্ব করছেন। মুহম্মদ জাফর ইকবাল উপন্যাসসমগ্রের এই খন্ডটিতে লেখকের অত্যন্ত জনপ্রিয় ছয়টি বই সংকলিত হলো। ইতিপূর্বে আলাদাভাবে তাঁর কয়েকটি গ্রন্থ প্রকাশের সৌভাগ্য আমাদের হয়েছে। এবারে একই মলাটের ভেতর উপন্যাসগুলো পাঠকের হাতে তুলে দিতে পেরে আমরা আনন্দিত।
ভূমিকা
আমার লেখা ছয়টি উপন্যাস নিয়ে উপন্যাসসমগ্র ১ প্রকাশিত হলো। এই সংকলনের প্রথম উপন্যাস ‘আকাশ বাড়িয়ে দাও’ লেখা হয়েছে আজ থেকে ত্রিশ বৎসরেরও আগে- আমি নিজে তখন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র। অল্প বয়সের কাঁচা আবেগ উপন্যাসটিতে খুব স্পষ্টভাবে উপস্থিত, এই সমগ্রে এটি সংযুক্ত না করলেই হয়তো নিজের প্রতি সুবিচার করা হতো। ‘দুঃস্বপ্নের দ্বিতীয় প্রহর’ প্রকৃতপক্ষে লেখা হয়েছিল একটি মঞ্চ নাটক হিসেবে এবং নিউ জার্সীতে সেটি সফলভাবে মঞ্চায়ন করা হয়েছিল। কাহিনীটা আমার খুব পছন্দ হয়েছিল বলে পরে উপন্যাস হিসেবে লিখতে আগ্রহী হয়েছিলাম। আমেরিকা ছেড়ে চলে আসার আগে আগে আমি লিখেছিলাম ‘বিবর্ণ তুষার।’ উপন্যাসের নামটি দেখেই বোঝা যায়, প্রবাস জীবন তখন আমার কাছে ক্লান্তিকর মনে হতে শুরু করেছে।
কাচ সমুদ্র, সবুজ ভেলভেট এবং ক্যাম্প- তিনটি উপন্যাসই বিভিন্ন সাময়িকীর ঈদসংখ্যাতে লেখা। উপন্যাসগুলোর শীর্ণ কলেবর দেখলেই সেটা বোঝা যায়। তবে পাঠকেরা এই তিনটি উপন্যাসকেই ভালোবাসার সাথে গ্রহণ করেছিলেন বলে এই সংকলনে যুক্ত করতে সাহসী হয়েছি।
মুহম্মদ জাফর ইকবাল
১৭ জানুয়ারী ২০০৫
সূচিপত্র
আকাশ বাড়িয়ে দাও
দুঃস্বপ্নের দ্বিতীয় প্রহর
বিবর্ণ তুষার
কাচ সমুদ্র
সবুজ ভেলভেট
ক্যাম্প