ভূমিকা
বাংলা উচ্চারণ শাস্ত্র পূণার্ঙ্গ শাস্ত্রের স্তরে অদ্যাবধি উন্নীত হতে পারে নি। তবে উত্তরণের জন্যে চলছে নানা রকম পরীক্ষা-নিরীক্ষা। এই পর্যায়কে অতিক্রম করতে সময় লাগবে অনেক। কারণ উচ্চারণ বাচনিক প্রক্রিয়া এবং Empirical Science বা পর্যবেক্ষণ নির্ভর বিজ্ঞান। স্থান ও কালে উচ্চারণ নির্বিশেষ থাকতে পারে না। আ ব্যবহৃত সকল শব্দের উচ্চারণ যেহেতু অন্বর্থসূত্রে বাঁধা যায় নি।তাই উচ্চারণ শা্স্ত্রেকে আশ্রয় করতে হয় প্রমিত কথ্য ভাষার বাচনকে। ফলে অঙ্কুরিত হয় বিচিত্র বিতর্কের । এই অনিবার্য বিতর্ককে স্বীকার করে নিয়েই আয়ত্ত করতে হয় উচ্চারণ শাস্ত্র।
প্রমিত উচ্চারণ নির্দিষ্ট করবার জন্যে প্রয়োজন, ব্যবহৃত ধ্বনিসমূহের বিস্তৃত পরিচয় অবগত হওয়া। আমরা জানি ধ্বনিসমূহ, স্বরধ্বনি ও ব্যঞ্জন ধ্বনি এই দুইভাগে বিভক্ত। স্বরধ্বনি বিচার ও বিশ্লেষণের জন্যে আছে তিনটি মাপকাঠি। যথা- (ক) স্বরধ্বনির উচ্চারণের জিহ্বার যে অংশ উঁচু হয় তা খুঁজে বের করা, (খ) জিহ্বায় যে অংশ উঁচু করা হয় তার পরিমাণ নির্নয় করা, (গ) স্বরধ্বনি উচ্চারণে ঠোঁট ও চোয়লের অবস্থা অবহিত হওয়া। পূর্বোক্ত তিনটি মাপকাঠি সঠিকভাবে অনুসরণ করতে পারলে স্বরধ্বনির উচ্চারণ বিকৃতি ঘটবে না।
ব্যঞ্জনধ্বনি বিচারের জন্যে আছে পাঁচটি মাপকাঠি। যথা: (ক) উচ্চারণের স্থান
(খ) উচ্চারণের স্থানে বায়ুপথের রূপ
(গ) কোমল তালুর অবস্থা
(ঘ) স্বরযন্ত্রের অবস্থা
(ঙ) স্বল্পপ্রাণতা ও মহাপ্রাণতার স্বাতন্ত্র্য।