একজন অতিমানবী

৳ 125.00

লেখক
প্রকাশক
আইএসবিএন
(ISBN)
9844581362
ভাষা বাংলা
পৃষ্ঠার সংখ্যা ৮০
দেশ বাংলাদেশ

“একজন অতিমানবী”বইটির প্রথমের কিছু অংশ:
আমার নাম কিরি । আমার কল্পনা করতে ভাল লাগে যে আমার বাবা-মা আমাকে অনাথ আশ্রমে দেবার সময় এই নামটি ব্যবহার করেছিলেন। ব্যাপারটি নিয়ে নিশ্চিত হবার কোনই উপায় নেই, কারণ কোন বাবা-মা যখন অনাথ আশ্রমে তাদের সন্তানকে দিয়ে আসে তখন তার পূর্ববর্তী সমস্ত তথ্য নষ্ট করে দেওয়া হয়। এমনটিও হতে পারে যে আমার বাবা-মা আমাকে কোন নাম ছাড়াই অনাথ আশ্রমে দিয়ে এসেছিলেন এবং অনাথ আশ্রমের মূল তথ্যকেন্দ্র র্যান্ডম ধ্বনি ব্যবহার করে আমার জন্য একটি নাম তৈরি করে নিয়েছে। সম্ভবত আমার বাবা ছিলেন না এবং আমার মা’র জীবনে একটা ভয়াবহ দুর্যোগ নেমে এসেছিল তাই আমাকে গভীরভাবে ভালবাসা সত্ত্বেও কোন উপায় না দেখে আমার মা আমাকে অনাথ আশ্রমে রেখে গিয়েছিলেন। আমাকে ছেড়ে চলে যাবার সময় আমি নিশ্চয়ই আকুল হয়ে কাঁদছিলাম এবং সম্ভবত আমার হাত দুটি তার দিকে প্রসারিত করে রেখেছিলাম, আমার দিকে তাকিয়ে নিশ্চয়ই আমার মায়ের বুক ভেঙে যাচ্ছিল কিন্তু তার কিছু করার ছিল না। অনাথ আশ্রম থেকে বের হয়ে আমার মা সম্ভবত দুই হাতে মুখ ঢেকে ব্যাকুল হয়ে কাঁদছিলেন এবং পথচারীরা তার দিকে অবাক হয়ে তাকিয়ে ছিল। নিজের সন্তানকে ছেড়ে আসার গভীর দুঃখে সমস্ত পৃথিবী নিশ্চয়ই তার কাছে শূন্য এবং অর্থহীন মনে হচ্ছিল।
কোম অবশ্যি আমার কথা বিশ্বাস করে না। তার ধারণা আমার কোন বাবা-মা ছিল না, আমাকে ল্যাবরেটরিতে একটা ক্লোন হিসেবে তৈরি করা হয়েছিল। আমি অনাথ আশ্রমে কিছু রবােটের তত্ত্বাবধানে বড় হয়েছি বলে সামাজিক আচার-আচরণ পুরােপুরি শিখে উঠতে পারি নি। রূঢ়ভাবে কথা বলতে না চাইলেও আমার বেশির ভাগ কথাই রুঢ় শােনায়। আমার মাঝে মাঝে কোন একজন প্রিয় মানুষকে কিছু একটা কোমল কথা বলতে খুব ইচ্ছে করে কিন্তু এক ধরনের সংকোচের জন্য বলতে পারি নি। আমার পরিচিত

বাংলাদেশের কিশোর-কিশোরী পাঠকদের কাছে সবচেয়ে জনপ্রিয় নাম মুহম্মদ জাফর ইকবাল। তিনি মূলত এ দেশের একজন বিখ্যাত লেখক, পদার্থবিদ এবং শিক্ষাবিদ। কিশোর সাহিত্য, শিশুতোষ গ্রন্থ, বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনী, গণিত বিষয়ক বই এর জন্য খুব অল্প সময়েই জনপ্রিয়তা লাভ করেন তিনি। মুহম্মদ জাফর ইকবাল ১৯৫২ সালের ২৩ ডিসেম্বর সিলেটে জন্মগ্রহণ করেন। মুক্তিযোদ্ধা বাবা ফয়জুর রহমানের চাকরির সুবাদে দেশের বিভিন্ন জেলাতেই তিনি পড়াশোনা করেছেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগ থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর শেষ করে পিএইচডি ডিগ্রী অজর্নের উদ্দেশ্যে স্কলারশিপ নিয়ে পাড়ি জমান যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয়ে। পিএইচডি সম্পন্ন করে ক্যালিফোর্নিয়া ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজিতে পোস্ট-ডক্টরাল গবেষণা সম্পন্ন করেন। পরবর্তীতে বিখ্যাত বেল কমিউনিকেশনস রিসার্চ ল্যাবেও গবেষক হিসেবে যোগদান করেন। ১৯৯৪ সালে দেশে ফিরে এসে তিনি শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগের বিভাগীয় প্রধান হিসেবে যোগ দেন। মুহম্মদ জাফর ইকবাল এর বই সবসময়ই এ দেশের কিশোর-কিশোরীদের কাছে বিশেষ আবেদন নিয়ে হাজির হয়েছে। কিশোর সাহিত্য, বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনী, বিজ্ঞান ও গণিত বিষয়ক অজস্র গ্রন্থ দিয়ে তিনি আলোকিত করে তুলেছেন এদেশের অগণিত কিশোর-কিশোরীর মনোজগত। মুহম্মদ জাফর ইকবাল এর বই সমূহ, যেমন- দীপু নাম্বার টু, আমার বন্ধু রাশেদ, আমি তপু, শান্তা পরিবার, দস্যি ক’জন ইত্যাদি ব্যাপক পাঠকপ্রিয়তা পায়। তার বেশ কিছু গল্প পরবর্তীতে নাটক ও চলচ্চিত্র হিসেবে টিভি পর্দায় স্থান করে নিয়েছে। তিনি একজন বিশিষ্ট কলামিস্টও। বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াডও তাঁর ছত্রছায়ায় গড়ে উঠেছে। মুহম্মদ জাফর ইকবাল এর বই সমগ্র সকল বইপড়ুয়াকেই আকৃষ্ট করে। সাহিত্যে অসামান্য অবদানের জন্য তিনি বহুবার পুরষ্কৃত হয়েছেন। বাংলা একাডেমি পুরষ্কার (২০০৪) এবং শ্রেষ্ঠ নাট্যকার হিসেবে মেরিল-প্রথম আলো পুরস্কার (২০০৫) সেগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য। এছাড়াও, কাজী মাহবুবুল্লা জেবুন্নেছা পদক (২০০২), শেলটেক সাহিত্য পদক (২০০৩), ইউরো শিশুসাহিত্য পদকসহ (২০০৪) অগণিত পুরষ্কার অর্জন করেছেন গুণী এই সাহিত্যিক।


বই সম্পর্কে কোন জিজ্ঞাসা বা মতামত থাকলে আমাদেরকে জানান
শেয়ার করুন

লেখকের অন্য বইসমূহ