“একজন অতিমানবী”বইটির প্রথমের কিছু অংশ:
আমার নাম কিরি । আমার কল্পনা করতে ভাল লাগে যে আমার বাবা-মা আমাকে অনাথ আশ্রমে দেবার সময় এই নামটি ব্যবহার করেছিলেন। ব্যাপারটি নিয়ে নিশ্চিত হবার কোনই উপায় নেই, কারণ কোন বাবা-মা যখন অনাথ আশ্রমে তাদের সন্তানকে দিয়ে আসে তখন তার পূর্ববর্তী সমস্ত তথ্য নষ্ট করে দেওয়া হয়। এমনটিও হতে পারে যে আমার বাবা-মা আমাকে কোন নাম ছাড়াই অনাথ আশ্রমে দিয়ে এসেছিলেন এবং অনাথ আশ্রমের মূল তথ্যকেন্দ্র র্যান্ডম ধ্বনি ব্যবহার করে আমার জন্য একটি নাম তৈরি করে নিয়েছে। সম্ভবত আমার বাবা ছিলেন না এবং আমার মা’র জীবনে একটা ভয়াবহ দুর্যোগ নেমে এসেছিল তাই আমাকে গভীরভাবে ভালবাসা সত্ত্বেও কোন উপায় না দেখে আমার মা আমাকে অনাথ আশ্রমে রেখে গিয়েছিলেন। আমাকে ছেড়ে চলে যাবার সময় আমি নিশ্চয়ই আকুল হয়ে কাঁদছিলাম এবং সম্ভবত আমার হাত দুটি তার দিকে প্রসারিত করে রেখেছিলাম, আমার দিকে তাকিয়ে নিশ্চয়ই আমার মায়ের বুক ভেঙে যাচ্ছিল কিন্তু তার কিছু করার ছিল না। অনাথ আশ্রম থেকে বের হয়ে আমার মা সম্ভবত দুই হাতে মুখ ঢেকে ব্যাকুল হয়ে কাঁদছিলেন এবং পথচারীরা তার দিকে অবাক হয়ে তাকিয়ে ছিল। নিজের সন্তানকে ছেড়ে আসার গভীর দুঃখে সমস্ত পৃথিবী নিশ্চয়ই তার কাছে শূন্য এবং অর্থহীন মনে হচ্ছিল।
কোম অবশ্যি আমার কথা বিশ্বাস করে না। তার ধারণা আমার কোন বাবা-মা ছিল না, আমাকে ল্যাবরেটরিতে একটা ক্লোন হিসেবে তৈরি করা হয়েছিল। আমি অনাথ আশ্রমে কিছু রবােটের তত্ত্বাবধানে বড় হয়েছি বলে সামাজিক আচার-আচরণ পুরােপুরি শিখে উঠতে পারি নি। রূঢ়ভাবে কথা বলতে না চাইলেও আমার বেশির ভাগ কথাই রুঢ় শােনায়। আমার মাঝে মাঝে কোন একজন প্রিয় মানুষকে কিছু একটা কোমল কথা বলতে খুব ইচ্ছে করে কিন্তু এক ধরনের সংকোচের জন্য বলতে পারি নি। আমার পরিচিত