ভূমিকা
নানা ধরনের কাজে ব্যস্ত থাকায় ষাট বছর বয়সের আগে আমি লেখা লেখি নিয়ে প্রায় বসতেই পারিনি। যখন পারলাম তখন কাজ আরও এমন তুলকালাম বৃষ্টির মতো ঝেঁপে এল যে লেখালেখি টিকিয়ে রাখাই হয়ে উঠল প্রায় যুদ্ধের মতো। তবু লেখাকে বুকের ভেতর সাধ্যমতো লুকিয়ে রেখে যেটুকু এগোনো গেল শেষঅব্দি তা এমন কিছু না হলেও একেবারে শূন্যও হল না। জীবনভর অজস্র রকমের কথা আর স্বপ্ন মাথার ভেতর দাউদাউ আগুনের মতো জ্বলে আজ একটু করে নিভে আসছে। তাদের লিখে যাওয়া হল না। অনেক ধরনের কথা অলিখিত থেকে গেল যা লিখে যাওয়া খুবই জরুরি ছিল। তবে যা লিখতে না পারায় মন সত্যি সত্যি বিমর্ষ হয়ে পড়ে তা হল শিশুদের লেখা। দুষ্টুমি আর দস্যিপনায় ভরা একটা ডানপিটে আর আর রোমাঞ্চকর শৈশব ছিল আমার। সে জীবনের নানা মজার ঘটনা আর দুরন্তপনা নিয়ে ঐ বয়সের শিশুদের জন্যে কিছু লেখার ইচ্ছা মনের ভেতর সবসময় আঁকু-পাঁকু করেছে; কিন্তু সম্ভব হয়নি হযত হবেও না কোনোদিন। কিন্তু কিছুদিন আগে নিজের বইগুলোর পাতা ওল্টাতে গিয়ে আচমকাই মনে হল আরাদাভাবে কিশোরদের জন্য কিছু না লিখলেও আমার গোটাকয়েক আত্মজীবনী ও বত্তৃতার বইয়ে এমন কিছু লেখা রযেছে যা পড়ে শিশুরা মজা পেতে পারে। আপাতত সেগুলো একখানে করে শিশুদের কিছু মজার যোগান দেবার জন্যেই এই কিশোরসমগ্র বের করা। বইটি শিশুদের কাছে ভালো লাগলে আমারও ভালো লাগবে।