একুশের বদৌলতে আজ বাংলা ভাষা বিশ্বের সবখানে ছড়িয়ে গেছে। বাংলা এখন বিশ্বর পঞ্চম ভাষা। প্রায় ৩০ কোটি মানুষ বাংলায় কথা বলে। বাংলাদেশের একমাত্র রাষ্ট্রভাষা এই বাংলা। সিয়েরালিওনে বাংলা অন্যতম রাষ্ট্রভাষা এবং ভারতে অন্যতম জাতীয় ভাষা। ভারতের পশ্চিম বাংলা ও ত্রিপুরায় দ্বিতীয় ভাষা এবং আসামের করিমগঞ্জ, কাছাড় ও হাইলাকান্দি, আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ জেলা প্রশাসনের বাংলা ভাষা গুরুত্ব পেয়েছে। সিঙ্গাপুরে বেশি বলা ভাষাগুলোর মধ্যে বাংলা লিপিতে ‘মঙ্গল’ উৎকীর্ণ হয়েছে। মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান তাঁর এই সংকলিত গ্রন্থে বাংলাসহ অন্য ভাষাসংক্রান্ত বিক্ষিপ্ত কিছু প্রসঙ্গ এনেছেন ভিন্ন ভিন্ন কয়েকটি প্রবন্ধে। মাতৃভাষাসহ যে-কোনো ভাষার প্রতি মমত্ববোধ সৃষ্টিতে এই প্রবন্ধগুচ্ছ নিঃসন্দেহে মূল্যবান।
মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান। প্রেসিডেন্সি কলেজ, রাজশাহী কলেজ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষা লাভ করেন। লন্ডনের লিঙ্কন্স্ ইন থেকে ১৯৫৯ সালে তিনি ব্যারিস্টার হন।
বিভিন্ন সময়ে ঢাকা ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ইতিহাস ও আইন বিভাগে অধ্যাপনা করেন। ১৯৬৪ সালে তিনি ঢাকা হাইকোর্ট বারে যোগদান করেন। ১৯৯৫ সালে বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি নিযুক্ত হন। তিনি ১৯৯৬ সালে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ-এর তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ছিলেন।
তিনি ২০০৭ সালে একুশে পদক এবং ১৯৮৪ সালে বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার লাভ করেন।
তিনি বাংলা একাডেমি ও এশিয়াটিক সোসাইটি অব বাংলাদেশ-এর একজন ফেলো। তিনি লিঙ্কন্স্ ইন-এর অনারারি বেঞ্চার এবং অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের উরস্টার কলেজের অনারারি ফেলো।
৬টি কাব্যগ্রন্থসহ এ পর্যন্ত তাঁর প্রকাশিত গ্রন্থের সংখ্যা প্রায় ৬০টি। তিনি বাংলাভাষার প্রথম ভাব-অভিধান যথাশব্দ-এর রচয়িতা। কোরানসূত্র, গঙ্গাঋদ্ধি থেকে বাংলাদেশ, রবীন্দ্রবাক্যে আর্ট সঙ্গীত ও সাহিত্য, আইনের শাসন ও বিচার বিভাগের স্বাধীনতা, বাংলাদেশের তারিখ, মিত্রাক্ষর : অন্ত্যমিল শব্দকোষ, কোরানশরিফ সরল বঙ্গানুবাদ ইত্যাদি তাঁর বিখ্যাত গ্রন্থ।