রবীন্দ্রনাথের অপ্রকাশিত পত্রাবলি
সব্যসাচী রবীন্দ্রনাথের পত্রাবলি তাঁর শিল্প-সৃষ্টিধারায় এক অভিনব মাত্রা সংযোজন করেছে। প্রসঙ্গ ও প্রকরণে তাঁর চিঠিপত্র বৈচিত্র্য-বিশিষ্টতার দাবি রাখে। রবীন্দ্র-পত্রাবলি আমাদের মূল্যবান সাহিত্য-সম্পদ। সারাজীবনে রবীন্দ্রনাথ যে বিপুলসংখ্যক পত্র-রচনা করেছেন তার সঠিক তথ্য জানার উপায় নেই। তবে গ্রন্থ ও পত্র-পত্রিকায় ১৩৭৯ সাল পর্যন্ত প্রকাশিত পত্রের সংখ্যা চারহাজার সাতানব্বইটি বলে জানা যায়। রবীন্দ্রনাথের অগ্রন্থিত, অপ্রকাশিত ও অনাবিষ্কৃত চিঠির সংখ্যাও যে কম নয় তা সহজেই অনুমেয়। নিরন্তর অনুসন্ধানের ফলে ক্রমশই রবীন্দ্রনাথের অনেক অজ্ঞাত বিলুপ্তপ্রায় চিঠিপত্রের সন্ধান মিলছে।
ডক্টর আবুল আহসান চৌধুরী সম্প্রতি রবীন্দ্রনাথের বেশ কয়েকটি অপ্রকাশিত ও অগ্রন্থিত চিঠি উদ্ধার করেছেন। সেই পত্রগুচ্ছ নিয়েই এই সংকলনের জন্ম। কাজী আবদুল ওদুদ, কবি সাবিত্রীপ্রসন্ন চট্টোপাধ্যায় ও অজ্ঞাতনাম ব্যক্তিকে লেখা চিঠিপত্রের মধ্যে সহৃদয়, গুণগ্রাহী, সৌজন্যপরায়ণ, স্পষ্টভাষী এক রবীন্দ্রনাথকে আবিষ্কার করা যায়। ডক্টর চৌধুরী এই সংকলিত পত্রগুচ্ছের প্রাসঙ্গিক পরিচয়ও তুলে ধরেছেন। পরিশিষ্টে সংযোজিত হয়েছে শিলাইদহ ঠাকুর এস্টেটের একটি বিনিময়-চুক্তি দলিল ও রবীন্দ্রনাথের স্বহস্তে লেখা কবিতা। এই ব্যতিক্রমী প্রয়াস রবীন্দ্রচর্চায় একটি মূল্যবান সংযোজন হিসেবে গণ্য হবে বলে আমাদের বিশ্বাস।
লেখক
ডক্টর আবুল আহসান চৌধুরীর জন্ম ১৩ জানুয়ারি ১৯৫৩, কুষ্টিয়ার মজমপুরে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে বি.এ. (অনার্স), এম. এ. এবং পিএইচ. ডি. উপাধি অর্জন। দুই দশকেরও বেশি সময় অধ্যাপনার সঙ্গে যুক্ত। বর্তমানে কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের প্রধান এবং মানবিক ও সমাজবিজ্ঞান অনুষদের দিন। মূলত প্রাবন্ধিক ও গবেষক। বিশেষ করে তাঁর লালন সাঁই, কাঙাল হরিনাথ ও মীর মশাররফ হোসেন- সংক্রান্ত গবেষণা দেশে-বিদেশে সমাদৃত হয়েছে। সাহিত্যসেবীদের দুষ্প্রাপ্য পত্রাবলি সংগ্রহ-উদ্ধার করে সংকলনের একটি ধারাবাহিক কাজ শুরু করেছেন। প্রথম পর্যায়ে প্রকাশিত হয়েছে ‘কাজী আবদুল ওদুদের পত্রাবলি’ (১৪০৫)।