দাদু ও আতাফল গাছটা

৳ 80.00

লেখক
প্রকাশক
ভাষা বাংলা
দেশ বাংলাদেশ

ফ্ল্যাপে লিখা কথা
‘দাদু রণাঙ্গণে লেখা পায়েরিটা জমা দিতে গিয়েছিলেন সদরে। শুনেছি সেটি দিয়ে বই হবে। সম্ভবত কোন ঝামেলা হয়েছে। আমি আম্মুকে টেনে বের করলাম ঘর থেকে। দাদুর ক্ষোভের কারণ জানার জন্য আগ্রহ তৈরি করলাম। তখন শেষে বিকেলের পশ্চিমাকাশটা হলদেটে রঙ ধরেছিল। আতাফল গাছটার পাতাগুলোও হয়ে পড়েছিল নিথর। দাদুর কাছে নিঃশব্দ পায়ে গিয়ে দাঁড়ালেন আম্মু। পেছনে আমিও। আম্মুর কাঁপা কণ্ঠের প্রশ্ন মুনে দাদু বসা থেকে উঠে দাঁড়ালেন। বিড়বিড় করতে করতে বললেন, বৌমা আমার মুক্তিযুদ্ধের সার্টিফিকেট চেয়েছে ওরা। আমি সার্টিঠিকেট আনতে গিয়েছিলাম। কিন্তু কি দেখলাম জানো? ওই চেয়ারটাতে একটা শূকর বসে আছে। হাতে বড় বড় নখ।

দাদু… আমি ডাকলাম। দাদু আমার দিকে তাকালেন না । আতাফল গাছের একটা পাতা ছিড়ে আঙুলে মুচড়িয়ে পিষে ফেলে দিয়ে এগিয়ে গেলেন সামনের দিকে। আকাশটা তখন গাঢ় বাসন্তি রঙ ধরেছিল।’
মুক্তিযুদ্ধের এই গল্পটি ছাড়াও বইটিতে রয়েছে কৌতুহল আর আনন্দের মোট চারটি গল্প।

একাত্তরের পাঁচ জুলাই নরসিংদীর শিবপুর উপজেলার সোনাকুড়া গ্রামে এক মুসলিম পরিবারে জন্মেছি আমি। সৌভাগ্য আমার, কলেজে পড়া পর্যন্ত গ্রামেই ছিলাম। সেই জীবনটাকে স্বরূপ সন্ধানের মতো করে লেখার মধ্য দিয়ে এখনও আমি খুঁজি। সন্ধ্যা পালানো শিয়ালের ডাক কিংবা দূর থেকে ভেসে আসা বাঁশির সুর এখনও আমাকে আবেশে উতলা করে। গভীর রাতের প্রহরে প্রহরে ডাহুকের হুঁশিয়ারি ডাক কিংবা ভোরের বাতাসে কচি নিমপাতার কাঁপন আমাকে এখনও নিয়ে যায় সে-ই শৈশবে। আমি হাতড়াই! আমি কাতরাই!! পেশা শুরু করেছিলাম সাংবাদিকতা দিয়ে। সাত বছর বিভিন্ন পত্রিকায় গুণী ও জ্ঞানীজনদের সঙ্গে কাজ করেছি। পরবর্তীতে চ্যানেল আইতে যুক্ত হই। এখনও অনুষ্ঠান নির্মাণ করছি চ্যানেল আইতে। লেখালেখির শুরুটা শৈশবে। আমি তখন সেভেনে পড়ি। আমার লেখা কবিতা বাংলাদেশ বেতারে পাঠ করা হলো। সেই থেকেই নিয়মিত লেখালেখি আমার। পরবর্তীতে আর কবিতা নয়Ñ গান, টিভি নাটক এবং গল্প উপন্যাস লিখছি। অনেক লেখার কারণেই হয়তো ইতোমধ্যে বেশকিছু পুরস্কারও পেয়েছি। যা-ই লিখি, ভালো লাগে। পড়ে আনন্দ পাই। বন্ধুরা উৎসাহ দেয়। কিন্তু বই হয়ে বাজারে এলে প্রতিবারই নিজের লেখা পড়ে মনে হয়, ধুর ছাই, কী লিখলাম? এসব আর লিখবো না। ঘুমভাঙ্গা ভোরের মতো আবারও আমার আকাশে সূর্য ওঠে। ফোটে আলো। লিখতে বসে যাই আমি। মনন এবং চেতনাকে পাশাপাশি রেখে লিখতে চেষ্টা করি। ইচ্ছে করে প্রেম ভালোবাসার কথাগুলো সাজিয়ে লিখতে। ওসবের কত কিছুই না অজানা থেকে যায়!

জীবনেও থাকে না বলা কতো কথা। কে রাখে সেই খবর!!


বই সম্পর্কে কোন জিজ্ঞাসা বা মতামত থাকলে আমাদেরকে জানান
শেয়ার করুন

লেখকের অন্য বইসমূহ