… জোয়ান বাস্তবের মুখােমুখি । প্রথম সমস্যা, কী জামাকাপড় পরবে? দখলদার বাহিনির হাতে বিপর্যস্ত একটি দেশে একটি মেয়ে ঘােড়ায় চেপে যাচ্ছে, এটা তাে রীতিমত আতঙ্কের ঘটনা। আর সে যদি সেপাই-শাস্ত্রী নিয়ে যুদ্ধে যায়, তবে তাে তাকে পুরুষের পােষাকই পরতে হবে। ভােকুলের লােকজন নিজেদের থেকেই এগিয়ে এল, ওপরে ও নিচে পরিধান করার অন্তর্বাস, ভারি বুট জুতা, কুঠার এইসব তারাই উপহার দিল। সুন্দর একটা ঘােড়াও জোয়ান তাদের কাছ থেকেই পেল । গভর্নর রােবেয়ার দু বােড্রিকুর দিলেন একটি তলােয়ার। জোয়ানকে চেনাই যায় না যেন। বাকিটা জোয়ান নিজেই করল, পিঠের উপর ছড়ানাে ঘন দীঘলকেশ নিজের হাতেই কচকচ করে কেটে ফেলল। বাহ এবারে তাে জোয়ানের যুদ্ধের সাজ শেষ হলাে… রূপকথার মতাে তার জীবন। অনুকরণযােগ্য তার দেশপ্রেম এবং উদ্যম। তার সততা দৃষ্টান্তযােগ্য। ঘােড়ায় চড়তে জানতেন না, যুদ্ধ করলেও যুদ্ধের নিয়ম কানুন কিছুই জানতেন না। অথচ তাকে দেখলেই সৈন্যরা সাহসী হয়ে উঠত। দুর্জয় সাহসী, গভীর দেশপ্রেমের অধিকারী, নির্ভীক চিত্তের জোয়ান অব আর্ক যুদ্ধক্ষেত্রেও করুণার প্রতিমূর্তি হয়ে উঠেছিলেন। তার মৃত্যু ফরাসীদের মনে নতুন চেতনা, নতুন উদ্দীপনা এনে দেয়। ফ্রান্সে ইংরেজদের অবরােধের চিহ্নই তারা মুছে ফেলে ।