“ছেলেদের মহাভারত” বইটির ভূমিকা থেকে নেয়াঃ
ছােটদের জন্য বিভিন্ন রচনা সে-সময় যে-ভাবে মুদ্রিত হয়ে প্রকাশ পেত তাতে রচনাগুলাে ছােটদের কাছে আকর্ষণীয় হয়ে উঠত না। সেজন্যে উপেন্দ্রকিশাের। নিজেই প্রকাশ করেন সন্দেশ পত্রিকা। সন্দেশ পত্রিকায় ছােটদের জন্য লেখাগুলাে ছােটদের মনের মতাে করে প্রকাশিত হতে শুরু করে। তিনি নিজেও সে-পত্রিকায় ছােটদের জন্য লিখতে শুরু করেন বিচিত্র বিষয় নিয়ে। উপেন্দ্রকিশােরের রচনার বিষয়বৈচিত্র্য ও সন্দেশ’ পত্রিকার বিষয়বৈচিত্র্য যুগপৎ আকৃষ্ট করতে থাকে ছােটদের। উপেন্দ্রকিশােরের লেখা গ্রহ-নক্ষত্রের কথা, পশু-পাখি-গাছপালার কথা, প্রাচীন কালের কথা, জ্ঞান-বিজ্ঞানের কাহিনী, ইতিহাস, ভূগােল, ভ্রমণ-কাহিনী, নানান আবিষ্কারের কাহিনী ইত্যাদি বিচিত্র বিষয়ক রচনার কারণে বাংলা শিশুসাহিত্যের বিষয়বস্তু হিসেবে এইসব বিষয় অন্তর্ভুক্ত হতে শুরু করে; বলা চলে বাংলা শিশুসাহিত্যের সীমানাও সেইসঙ্গেই সম্প্রসারিত ও চিহ্নিত হতে থাকে। আর তাই উপেন্দ্রকিশােরকে বাংলা শিশুসাহিত্যের সীমানা-সন্ধানী লেখক হিসেবে চিহ্নিত করা যায়। ছেলেদের মহাভারত উপেন্দ্রকিশাের রায়চৌধুরীর দ্বিতীয় প্রকাশিত বই। বইটির প্রকাশকাল আনুমানিক ১৮৯৪ সাল। তাঁর প্রথম প্রকাশিত বই ছেলেদের রামায়ণ। পণ্ডিতদের মতে সংস্কৃত ভাষাতে মহাভারতের আগেই রামায়ণ রচিত হয়েছিল। উপেন্দ্রকিশােরও ছেলেদের মহাভারত-এর আগেই ছেলেদের রামায়ণ রচনা করেছেন। দুটি গ্রন্থের বৈশিষ্ট্যগুলাের মধ্যে অনেকটাই পার্থক্য।