তারাশঙ্করের বন্দ্যোপাধ্যায়ের গল্পে বিশেষভাবে বীরভূম-র্বধমান অঞ্চলের সাঁওতাল, বাগদি, বোষ্টম, ডোম, বাউরি, গ্রাম্য কবিয়াল ইত্যাদি সম্প্রদায়ের কাহিনী চিত্রায়িত হয়েছে। কবি উপন্যাসের উপজীব্য অন্ত্যজ শ্রেণির একজন কবিয়ালের জীবনগাথা। কয়িালের নাম নিতাইচরণ। নিচু বংশে জন্মানো নিতাইচরণ গ্রামের সবাইকে চমকে দিয়ে কবি হয়ে ওঠে। সে কবিয়ালদের দোহার হিসেবে কাজ করছিল। কিন্তু গ্রামের পালাগানের আসরে এক প্রতিষ্ঠিত কবিয়ালের অনুপুস্থিতিতে তার সামনে সুযোগ খুলে যায় নিজের কবিয়াল পরিচয় গ্রামবাসীকে জানিয়ে দেয়ার। অভিজ্ঞ কবিয়াল মহাদেবের কাছে সেই দফায় হেরে গেলেও তার উদ্দেশ্য সফল হয়। বাবুরা রীতিমত অবাক- ‘ডোমের ছেলে পোয়েট!’ এদিকে রাজারই এক আত্মীয়কে ঠাকুঝি বলে ডাকত সে। এই মেয়েটার জন্যই নিতাই এর মাথায় একটা পদ তৈরি হয়- কাল যদি মন্দ তবে চুল পাকিলে কান্দ কেনে?’ জীবনের সব জায়গায় অপমান পাওয়া ঠাকুরঝি এই পদ শুনে আন্দােলিত হয়। আর নিতাই এর মনে, অসম্ভব জেনেও ঠাকুরঝির জন্য গভীর প্রেম জন্মায়। একপর্যায়ে বিষয়টি জানাজানি হলে নিতাই গ্রাম ছেড়ে চলে যায়। কিন্তু তার ন না টেকায় আবারও সে নিজের গ্রামে ফিরে আসে। রাজা’র কাছে জানতে পারে ঠাকুরঝি আর বেঁচে নেই, নিতাই গ্রামছাড়ার পর সে উন্মাদ হয়ে মারা যায়। গভীর হতাশায় নিতাই প্রশ্ন করে- জীবন এত ছোট ক্যানে?’