ফ্ল্যাপে লিখা কথা
ছন্দের সুকুমার শিল্প ছড়া। তাল লয় ছন্দ আর শব্দের গাঁথুনিতে ছড়া তার অবয়ব খুঁজে পায়। শিল্পীর হাতে ভাস্কর্য যেমন নানা অবয়ব পায় তেমনি ছড়াকার ভেদে চিন্তার অবিজ্ঞতার মিশেলে ছড়াও হয়ে উঠে বহুমাত্রিক বর্ণিল এবং ছন্দকাড়া। ছড়াকে এমনি শোভনরূপে যারা এঁকেছেন তাদের একজন আনজীর লিটন। ৮০ দশকের শুরুতে আনজীরের হাতেখড়ি। যেসব ছড়াকারের হাতে সময়ের ঘাত-প্রতিঘাতে ছড়া নতুন ব্যঞ্জনা সৃষ্টি করেছে, নতুন বাঁকে পথ খুঁজেছে, গতানুগতিক পথ ভেঙে নতুন পথ নির্মাণ করেছে আনজীর লিটন সেইসব সৃষ্টিশীল ছড়াকারদের একজন। মুক্তিযুদ্ধ উত্তর বাংলাদেশের শিশুসাহিত্যের দশক ফেরার অভিজ্ঞতায় আনজীর লিটন স্বীয় সৃষ্টির শক্তিতে নির্মাণ করতে সক্ষম হয়েছেন নিজস্বধারা। ছোটদের কাছে যেমন তেমনি বড়দের কাছেও তিনি সমান জনপ্রিয়। তার মূলে রয়েছে নতুন প্রজন্মকে প্রতিমূহুর্তে সুন্দর ও সৃষ্টি স্বপ্নের উদ্বুদ্ধ করা। দেশাত্মবোধ, তথ্যপ্রযুক্তি নির্ভর সমকালীন জীবন, লোক বাংলার শ্লোক-ছড়ার হাজার বছরের প্রত্মতাত্ত্বিক নির্মাণের ধারাবাহিকতায় তার ছন্দময় পদাবলীতে প্রতিফলিত হয় আধুনিক শিল্পরূপ। বিভিন্ন সময়ে প্রকাশিত গ্রন্থগুলো থেকে দশটি ছড়াগ্রন্থ নিয়ে প্রকাশ হলো ছড়াসমূহ-১। এই ছড়াগুলো আশির দশক থেকে শূন্যদশকের সূচনা সময়ের মধ্যে রচিত। বক্তব্য, ছন্দের কারুকাজ, সমকালীন ঘটনা, উপস্থাপন রীতি- এসব বিষয়কে মানদণ্ড হিসেবে বিবেচনা করা হয়েছে। কিছু কিছু ছড়া প্রথমগ্রন্থে যেভাবে ছাপা হয়েছিল তা পরিমার্জন করা হয়েছে। এছাড়া কিছু অগ্রন্থিত ছড়া এ ছড়াসমগ্র-১-এ মলাটবদ্ধ করা হল।