‘ওরা এবং ওদের মায়েরা’ বইয়ের ফ্ল্যাপের কথাঃ
প্রবাসী বাঙালি রঞ্জনা কলকাতায় এসে বিশাল প্রাসাদ বানিয়েছে। ওর স্বামী বিজনও চেয়েছিল এই শহরে ওদের একটা বাড়ি হোক। সেই বাড়িতে ক্রমশ বড় হতে থাকা কিশোরী কন্যা টুপুরকে বিদেশ থেকে নিয়ে গিয়ে মানুষ করবে রঞ্জনা। চাকরির পর্ব শেষ করে বিজন দেশে ফিরবে। কিন্তু ইতিমধ্যেই বাবা-মায়ের ব্যস্ত জীবনের অন্তরালে টুপুর সম্পূর্ণ বিপথগামিনী। নানা নেশা, একাধিক পুরুষ বন্ধু আর বেহিসেবি খরচে সে অভ্যস্ত হয়ে গেছে। কলকাতায় আচমকা চলে এল টুপুর। স্বপ্নভঙ্গের ঘোর কাটিয়ে রঞ্জনা মেয়ের মানসিক চিকিৎসা করায়। তবু মায়ের সঙ্গে তার তীব্র বিরোধ আর বিচ্ছেদের যন্ত্রণা। যেন সমস্ত শেকড় কেটে দিয়েছে। অবশেষে টুপুরের বিদেশি প্রেমিক বব ওকে ভালবাসা দিয়ে বাঁচিয়ে তোলে।
এরই পাশাপাশি লেখক বুনেছেন চাকরিজীবী মধ্যবিত্ত মা নন্দিনী আর তার স্কুলে-পড়া কিশোরী কন্যা ঝিলমের কাহিনি। ঝিলমের বাবা আলাদা থাকে। কোনও এক তন্ত্রসাধনার আশ্রমে। মায়ের সারাদিনের অনুপস্থিতিতে শুধু স্কুল, পড়াশোনা আর বৈচিত্র্যহীন জীবন কাটাতে গিয়ে নিঃসঙ্গ অপরিণত নূপুর অনিলের প্রেমে পড়ে। অনিল পাড়ার বস্তির ছেলে। একদিন ঝিলম পালায় অনিলের সঙ্গে। মেয়ের সন্ধানে বিভ্রান্ত নন্দিনী যায় পুলিশের কাছে। রঞ্জনাও তখন টুপুরের কারণে সেখানেই। দুই মায়ের পরিচয় হয়। দু’জন দু’জনকে অনেক গভীরে ছোঁয়। পরস্পরের যন্ত্রণা অনুভব করে। বিভ্রান্ত টুপুর ও স্বপ্নছুটি ঝিলম আবার ফিরে আসে মায়েদের কাছে। কিন্তু কোন পথে? সমরেশ মজুমদারের এই আশ্চৰ্য অন্তলীন উপন্যাসে সেই কাহিনি।