“প্রাচীন সভ্যতা সিরিজ: মিসর” বইয়ের ফ্ল্যাপের অংশ থেকে নেয়া:
সভ্যতার ইতিহাস লেখায় নিজেকে যুক্ত রেখেছি প্রায় দেড় দশক। এ-সংক্রান্ত আমার লেখা বই সাধারণ পাঠক এবং কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের আগ্রহ ও প্রয়ােজন কিছুটা মেটায়। প্রাচীন পৃথিবী নামে ছােটদের জন্য আমার লেখা প্রাচীন সভ্যতার ইতিহাস বিষয়ে একটি বই এক দশক আগে প্রকাশিত হয়েছে। এর পর থেকেই একটি শূন্যতা অনুভব করছিলাম। আমি বিশ্বাস করি, শিক্ষাজীবনের শুরু থেকে শিশু-কিশােরের মধ্যে খুব সাধারণভাবে হলেও বিশ্ব ইতিহাস—বিশেষ করে সভ্যতার ইতিহাস সম্পর্কে ধারণা থাকা জরুরি। এর ভেতর দিয়ে নিজের ও জগৎ সম্পর্কে জানার আগ্রহ বেড়ে যায় । কিন্তু এই আগ্রহ তৈরির জন্য প্রয়ােজন ইতিহাসের তথ্যে ভারাক্রান্ত কোনাে বই নয়—রঙিন ছবিতে সমৃদ্ধ সহজ, সাবলীল ভাষায় যতটা সম্ভব নির্ভার তথ্যে সীমিত পৃষ্ঠায় বিশ্ব সভ্যতা উপস্থাপন। এই দায়িত্ববােধ থেকে নিজেকে যখন প্রস্তুত করছিলাম, তখন এগিয়ে এল প্রথমা প্রকাশন। প্রকাশকের আগ্রহের সঙ্গে আমার চিন্তা মিলে যাওয়ায় আমি এই বই লেখার কাজ শুরু করি। প্রতিনিধিত্বশীল কয়েকটি সভ্যতা নিয়ে প্রাচীন সভ্যতা সিরিজ নামে আট খণ্ডে বই লেখার যাত্রা শুরু হয় এভাবেই।
এটি এই সিরিজের প্রথম বই—মিসরীয় সভ্যতা নিয়ে লেখা। ইতিহাসের জনক গ্রিক ইতিহাসবিদ হেরােডােটাস মিসরীয় সভ্যতা দেখে অবাক হয়েছিলেন। আর বুঝেছিলেন, এই সভ্যতা গড়ে ও বেড়ে উঠতে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রেখেছে নীল নদ। তাই বিস্মিত হেরােডােটাস বলেছিলেন, “মিসর নীল নদের দান’, আকাশ স্পর্শ করা পিরামিড, অবাক করা মমি, স্ফিংসের মতাে নজরকাড়া মূর্তি, হায়ারােগ্লিফিক নামের চিত্রলিপি—এমন সব সৃষ্টিতে উজ্জ্বল মিসরের প্রাচীন সভ্যতা।