ভূমিকা
পুরোনো ঢাকার ইতিহাস প্রায় পাঁচশত বছরের। এই নগরীর পোড়াপত্তন থেকে এখানে গড়ে উঠেছে স্বতন্ত্র ধারার এক সংস্কৃতি সভ্যতা। এখানকার স্বকীয় কৃষ্টি-সাহিত্য, আচার-ব্যবহার, ভাষা-খাদ্য, পোশাক-আশাক এক ঐতিহ্যবাহী আভিজাত্যে সমৃদ্ধ। এই আদি ঢাকাইয়া অধিবাসীরা কালক্রমে নানা অঞ্চল থেকে এসে এখানে বসতি স্থাপন করে। এদের আমরা সাধারণত দু’ভাগে ভাগ করি কুট্টি ও সুখবাস বা খোশবাস। এদের কথাবার্তা, আদান প্রদান বেশ রসালো বা উইটি। কেউ অপভ্রংশ বাংলায়, কেউ হিন্দি-উর্দু-মেশানো বাংলা অপভ্রংশে কথা বলে। বেশ আয়েসী স্বমর্যাদাপূর্ণ এখানকার মানুষগুলো হাসি-ঠাট্টা-মজাক-এ জীবনযাপন করে। এদের মুখেমুখে না বচন-প্রবচন, বানী-টিপ্পুনি, কথোপকথন-চুটকি প্রচলিত সে সবের কিয়দাংশ এখানে উদ্ধৃত করা হলো। এসব অনেক সময় এক অঞ্চল থেকে লোকমুখে অঞ্চলভেদে আলাদা উপস্থাপিত হয়ে থাকে। এসব মুখরোচক কথন খাঁটি ঢাকাইয়া লোক সাহিত্যেরই অংশ। এর অনেকটাই ভাষা-সাহিত্য, সংস্কৃতি-সংগীত, চিত্রকখা-শিল্পী আজ প্রায় বিলূপ্তির পথে। একজন খাস ঢাকাইয়া জন্মধন্য মানুষ হিসেবে আমি এসব তুলে ধরার চেষ্টায় রত। এগুলো থেকে এ অঞ্চলের জীবনাচার বৈচিত্রময় স্বর-শব্দ উপস্থাপনে যদি পাঠক নূন্যতম আনন্দ খোরাক-চিন্তন পেয়ে থাকেন তাহলেই আমি স্থার্থক।
আসলাম সানী