ইতোমধ্যেই যে বই বিক্রি র শীর্ষে স্থান নিয়েছে। আর হাসান আজিজুল হক মানেই তো অন্য এক নতুন আবিষ্কার। যে আবিষ্কার ঢেউ তুলতে সক্ষম যে কোনো লেখায়। আগুনপাখি বাংলাসাহিত্যেই এক অভাবনীয় যোগ। কারণ এই উপন্যাসটি দিয়ে হাসান আজিজুল হক জানিয়ে দিয়েছেন তিনি শুধু অসম্ভব শক্তিমান ছোটগল্পকারই নন, তিনি একজন আধুনিক উপন্যাসিকও।
গাঁয়ের একটি মেয়ে, বাপের বাড়ি শ্বশুরবাড়ির বাইরে সে জানে চারপাশের মানুষজনকে, যাদের মধ্যে বেশিরভাগই হিন্দু । হিন্দু বলে তারা যে আলাদা, তেমন তো কিছু বোঝেনা সে । গভীর মমতায় সে গড়ে তোলে তাদের বড় একান্নবর্তী সংসার, আর রাতের নিরালায় স্বামীর কাছে শিখে নেয় অল্পসল্প লেখাপড়া । সুখ দুঃখ এর নানা অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে সে দেখে কেমন করে তার স্বামী জড়িয়ে পড়ে সামাজিক কাজে, হিন্দু মুসলমান দুই সম্প্রদায় এর কাছেই কতটা প্রিয় এক নেতা হয়ে ওঠে সে। কিন্তু হঠাত যেন পাল্টে যায় সব। তাদের একান্নবর্তী সংসারেও ধরে ভাঙ্গন, আর বাইরেও কোথা থেকে রব ওঠে যে দেশটাও নাকি ভাগ হয়ে যাবে । তা কি করে হয় ? দেশ আবার ভাগ হয় কেমন করে ? অবিশ্বাস্য সেই ঘটনাও সত্য হলো একদিন। মুসলমান পাড়া প্রতিবেশীরা চলে যেতে লাগলো ভিটে ছেড়ে । পরিজনেরাও । কিন্তু সে? না , সে কিছুতেই যাবেনা, কেননা, সে বলে ” আমাকে কেউ বোঝাইতে পারলেনা ক্যানে আলেদা একটো দ্যাশ হয়েছে ,…[কেন] এই দ্যাশটি আমার লয়।”
সেই মেয়েটির মুখের আটপৌরে ভাষায় বলা এ এক বুকভাঙ্গা দেশভাগের গল্প ।