ভূমিকা
অনন্ত করুণাময়, পরম দয়ালু আল্লাহ্র নামে
অশান্তি ও হানাহানিতে পৃথিবীতে ভরে গেছে। মানুষের মনুষ্যত্ব বিলুপ্ত প্রায়। নানা মতবাদে তারা দিশেহারা, বিভ্রান্ত। মানুষ আপনার শ্রেষ্ঠত্ব হারাতে বসেছে। পাক-ভারত-বাংলাদেশ বিশ্বে ঐতিহ্য-মন্ডিত দেশ। এই তিন দেশে স্বার্থগত রাজনৈতিক কারণে ভুল বুঝাবুঝির সৃষ্টি হয়েছে। সুকৌশলে এই তিন দেশে অনৈক্য সৃষ্টি করা হচ্ছে। নানা ঘাত-প্রতিঘাত সত্ত্বেও এই তিন দেশেরই জনসাধারণ শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের পক্ষপাতি। তাঁদের এই আকূতি মনের অভিব্যক্তিই আমাকে এই গ্রন্থখানি লিখতে অনুপ্রাণিত করেছ। এই তিন দেশের অধিবাসীদের মধ্যে সৌহার্দ্য, ঐক্য প্রতিষ্ঠার মহৎ উদ্দেশ্যকে সম্মুখে রেখে ‘হিন্দু-মুসলমান ঐক্যের রূপরেখা’ গ্রন্থখানির পরিকল্পনা। দেশ ও জনগণের সেবায় কর্তব্য পরায়ণতা তথা দায়িত্ববোধের পরিচয় দান কল্পে ঐতিহাসিক নানা তথ্যে সমৃদ্ধ গ্রন্থখানি দ্বারা বাংলা ভাষা-ভাষী মানুষের দায়বদ্ধতাকে যুক্তি সঙ্গতভাবে স্মরণ করিয়ে দেওয়া হয়েছে। দেশপ্রেম, একতা ও প্রগতির বাস্তবায়ন যে কোন দেশের অধিবাসীবৃন্দের অমূল্য সম্পদ। এ মহৎ চেতনার নিরিখে শান্তি-সম্প্রীতির লক্ষ্য সাধনে গ্রন্থখানির প্রস্তাবনা।
গ্রন্থখানির এহেন মহৎ উদ্দেশ্য এবং লক্ষ্য পূরণে নানাবিধ দুর্লভ তথ্যাবলী সন্নিবেশিত করা হয়েছে।বাংলা ভাষাভাষী স্বহৃদয় ভাই-বোনদের চিন্তা মননের মধ্যে পারস্পরিক ঐক্য ও ইনসাফ প্রতিষ্ঠা, সবার তরে সবাই আমরা এ বোধের ব্যাপক বিস্তার, ইতিহাসের স্বচ্ছ গতিময় ধারার অক্ষুন্নতা এবং মানবিক মূল্যবোধ জাগ্রত করতেই গ্রন্থখানির প্রকাশ উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ।
বন্ধুবর, ইফতেখার রসুল জর্জ বাংলাদেশস্থ ঢাকা নওরোজ সাহিত্য সম্ভারের কর্ণধার গ্রন্থখানি যত্নসহকারে প্রকাশের দায়িত্ব গ্রহণ করায় আমি কৃতজ্ঞ। তাঁর এহেন মহৎ প্রচেষ্টা ভারত বাংলাদেশের বাংলা ভাষা-ভাষী মানুষের দেহ মনে নতুন শক্তি ও সাহসের সঞ্চার করবে। মানুষ হিসেবে মনুষ্যত্ববোধে উদ্বুদ্ধ করবে এ চেতনার ব্যাপ্তিই গ্রন্থখানির প্রতিপাদ্য বিষয়। সর্বোপরি মানুষের মধ্যে হিংসা-ঘৃণা মানুষকে হেয় প্রতিপন্ন করে, শান্তি সম্প্রীতিও ভালবাসা মানুষকে সত্যিকারে মানুষে পরিণত করে। বাঙালী জাতি শান্তি কামী , জাতীয় সংহতি রক্ষায় তারা একদেহ একপ্রাণ। সকল ভেদাভেদেও উর্দ্ধে তারা দেশ ও জাতিগঠনে এক ও অভিন্ন। শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানই তাদের একান্ত কাম্য। এ আশা তাদের সফল হোক।…. বাংলাদেশ ও ভারতের সমৃদ্ধি ও জন সাধারণের কল্যাণর্থে সত্যিকারের মানুষ হিসেবে বেঁচে থাকার তাগিদেই হিন্দু মুসলমান পরস্পরের মধ্যে যে ঐক্য ভাবনা তারই পরিপূরক রূপ সৌন্দর্য গ্রন্থখানিকে বিশেষ মর্যাদার অধিকারী করেছে। আমাদের সকলের চলার পথে ঐক্য-ভালবাসা, শান্তি-মৈত্রী পাথেয় হোক-গ্রন্থখানি প্রকাশের প্রক্কালে আজকের দিনে এটাই আমার প্রার্থনা।
দোয়া-গো-হিতাকাঙ্ক্ষী
মোবারক করীম জওহর