“দুঃখ ও ভালোবাসার নদী ” বইটি সর্ম্পকে কিছু তথ্যঃ মানুষ ও তার আচরিত জীবনের প্রকৃতি ও মাত্রা কত যে ভিন্ন ও বিচিত্র হতে পারে আমরা কি তা জানি? ক্ষুদ্র জাতিসত্তা চাকমা, বড়ুয়া, মারমা, ত্রিপুরীদের পাহাড়-নদী অঞ্চল কীভাবে তাদের অস্তিত্ব ও স্বপ্নকে নিয়ন্ত্রিত করে তাও আমরা জানি না। ১৯৬০ সালের কাপ্তাই বাঁধ কী ভয়াবহ রূপ নিয়ে পার্বত্য চট্টগ্রামবাসীর জীবন তছনছ করে দেয় তা উপন্যাসের ভাষায় পড়েছেন কি? সন্ত্রাস, বঞ্চনা, লোভ, প্রতারণা এবং বড় ও ছোট জাতিসত্তার জটিল সম্পর্ক-সমস্ত কিছুর বুনোটে সেই দুর্ধর্ষ, মলিন অথচ জীবন-চেতনায় তা মহিমান্বিত। দুটি উপন্যাসই পরিসরে ছোট কিন্তু তার অন্তর্লোকের ব্যাপ্তি বিশাল। ‘শ্রামণ গৌতম’ (১৯৯৬) উপন্যাসে প্রথম পট উন্মোচিত হয়। ‘সমুদ্রচর ও বিদ্রোহীরা’ (১৯৯৯) এবং সমপ্রতিকালের ‘অশ্রু ও আগুনের নদী’ (২০০৬) উপন্যাসদ্বয় বাংলা সাহিত্যে দিকচিহ্ন হয়ে থাকবে। চট্টগ্রাম ও পার্বত্য চট্টগ্রামের পাহাড়, নদী, সমুদ্র ও অরণ্যভূমিকে কী তীব্র আসক্তি দিয়েই না এই ঔপন্যাসিক চিনেছেন! ছোট গল্পেও তিনি আমাদের কথাসাহিত্যে অপ্রতিদ্বন্দ্বী। তাঁর গল্প ও উপন্যাসের ভুবন এতই কাছের অথচ এতই অচেনা যে তা বলে ভ্রম হয়। সেই স্বপ্নওএত মায়াময় আবার এত অন্তরঙ্গ যে আমাদের যুগপৎ বিস্মিত বিমথিত তৃপ্ত ও ক্ষুৎপিপাসিত করে।