ফ্ল্যাপে লিখা কথা
ছেলেটার সঙ্গে আপনাদের আগেই পরিচয় হয়েছে-দন্ত্যন, দন্ত্যন রুহমান। ওই যে তার মা ওর নানা নজির রহমানের সঙ্গে মিলিয়ে নাম রেখেছিল নজির রহমান। তার মতো ভালো মানুষের নজির নাকি অত্র এলাকায় একটিও ছিল না। কিন্তু কিছুটা বড় হয়ে সে বুঝতে পারে, তার মধ্যে আসলে ভালো মানুষের কোনো নজির নেই-তার মধ্যে হিংসা আছে, ক্রোধ আছে, লোভ আছে, খারাপ অনেক কিছুই আছে। তাই একদিন নিজের নামটা পাল্টে ফেলে সে। নজিরের ‘ন’ আর রহমানকে রুহমান করে নিজের নতুন নাম রাখে দন্ত্যন রুহমান।
সম্পূর্ণ বোহেমিয়ান এ ছেলেটা মাঝে মাঝেই বাড়ি থেকে পালায়, এর ওর সঙ্গে পরিচিত হয়, যার যেটা প্রয়োজন তার সবটুকু সাহায্য করে সময় কাটায়। অদ্ভুত জীবন তার। সেখানে তার বাবা আছে, মা আছে,ছোট দুটো বোন আচে, বড় বোনও আছে একটা-মনু আপা। এই মনু আপাকে নিয়েই তার যত কষ্ট । তাকে দেখলেই তার মরে যেতে ইচ্ছে করে, তার জন্যই এভাবে রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে বেড়ায় সে, ঘর বিমুখ হয়ে পড়ে দিনের পর দিন। সারাক্ষণ উদাস হয়ে বেড়ানো এই ছেলেটা দেখে তার অর্পাও আছে, চৈতী আছে , কবিতা আছে, নিপুণ আছে। অকৃত্রিম বন্ধু রিছিল, পলক, বিপ্লব আছে। একটা কুকুর গুড্ডুও আছে।
তারপর একদিন পরিচয় হয় একটা নতুন বন্ধুর সঙ্গে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সে দেখে বন্ধু এত ভয়ঙ্কর হয়। না সব মানুষের মতো সব শেষে সে দেখে সে আসলে একা, একাই। সেখানে অর্পা নেই, চৈতী নেই, কবিতাও নেই। জ্যোৎস্নার আলোয় চকচক করা এক নদীর ধারে বসে সে জানতে চায় জীবনের মানে, জ্যোৎস্না মেশানো নদীর জ্যোৎস্নাজলে ডুব দিয়ে খুঁজতে যায় জীবনের ছন্দ।
হায়! তুচ্ছ জীবনের জন্য মানুষের এত আয়োজন!