ভূমিকা
হাতেমতাঈ মনে-প্রাণে বিশ্বাস করতেন, আল্লাহ ব্যতীত কোন উপাস্য নাই। তিনি চিরজীবী ও নিত্য বিরাজমান, আকাশ ও মাটি যা কিছুই অস্তিত্ব রয়েছে সবই তাঁর। তিনি মহান, মহীয়ান। মানুষ জাগতিক সুখের আশায় ধম-দৌলত কামনা করে। সে অক্লান্ত পরিশ্রম ও প্রয়াসে ধন-পার্থিব বস্তু লাভ করলেও সুখ-শান্তি পায় না। হাতেমতাঈ বাল্যের দিনগুলি চরমতম ভোগবিলাসের মধ্য দিয়ে অতিবাহিত করেছিলেন। তাঁর পিতা আলমপনা ছিলেন এ্যামন এলাকার নামদার বাদশাহ। কৈশোরে পা দিতে না দিতেই ধমন-দৌলত ও ভোগবিলাসের প্রতি অনীহা দেখা দেয়। তাই তো তিনি আপনজনের অগোচরে ঘর ছেড়ে বেরিয়ে পড়েন আল্লাহর বান্দা অসহায় আর্তজনের কষ্ট হয়রানি নিবৃত্ত করতে। আল্লাহর বান্দাদের মুখে একটু মাত্র হাসি ফুটাতে তিনি নিজের জীবনের ঝুঁকি নিয়েও বহুবার চরমতম বিপদের মুখে ঝাঁপিয়ে পড়তেও দ্বিধা করেন নি। মানবতার সেবাই আল্লাহর সেবা এবং প্রকৃত মুক্তির পথ, একথা মনে-প্রাণে বিশ্বাস করতেন বলেই তো তিনি হাজারো দুঃখ কষ্ট স্বীকার করে হাসিমুখে সারা আরব দুনিয়া হন্যে হয়ে ঘুরে বেড়াতে উৎসাহী হয়েছিলেন। আল্লাহকে আমরা চোখে দেখতে পাই না, আমরা দেখি মানুষকে। তাই তো তাঁর দৃষ্টিতে মানুষই ছিল মহান। তাঁর মানবসেবার সুমহান ব্রত উদ্যাপনের বিবরণ বর্তমান গ্রন্থ ‘দস্তান-এ হাতেমতাঈ’-এ নিষ্ঠার সঙ্গে তুলে ধরতে প্রয়াসী হয়েছি। গ্রন্থটি পাঠক-পাঠিকাদের কাছে সমাদৃত হলে আমার পরিশ্রম ও প্রয়াস সার্থক হবে।