ফ্ল্যাপে লিখা কথা
জীবন ও পরিবেশের সাখে খাপ খাইয়ে বেঁচে থাকার কলাকৌশল আয়ত্ত করাই শিক্ষা। তাই যে শিক্ষা মানুষের বেকারত্ব সৃষ্টি করে , প্রকৃত অর্থে তাকে শিক্ষা বলা যায় না। কথায় আছে অন্ন না থাকলে আনন্দও থাকে না। কেননা আনন্দের সহিত সম্পাদিত কাজে সাফল্য অনিবার্য। বাঙালির অন্ন কষ্ট তথা অভাব-অনটন হাজার বছরের এমনকি নিত্য দিনের। এর কারণ প্রকৃত শিক্ষার অভাব। আজও আমাদের দেশে পুথিগত বিদ্যা কন্ঠস্থ করে শিক্ষার্থীরা কেবল সার্টিুফিকেট অর্জন করে , জ্ঞানার্জন করে না্। আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থা এ জন্যই দায়।অপ্রিয় হলেও সত্য যে , সুলতানি -মুঘল আমলের সাম্প্রদায়িক পরকালমুখী শিক্ষা তথা বিট্রিশ ঔপনিশিক আমলের ফিল্ট্রেশন শিক্ষা পদ্ধতি ও শিক্ষা ব্যবস্থা আজও আজও আমাদের দেশে স্বমহীমায় চালু ও বলবৎ রয়েছে। এ শিক্ষা ব্যবস্থা ও শিক্ষানীতি শিক্ষার্থীকে কর্মের উপযোগি করে গড়ে তোলে না,বেকার বানায়।অধিকন্তু , পরনির্ভরশীল নকলনাবিশে পরিনত করে। ব্রিটেন , ফ্রান্স, জার্মানি প্রভৃতি উন্নত দেশের শিক্ষকেরা ক্লাসে না পড়িয়ে কোচিং সেন্টারে বা প্রাইভেট নিকেতনে সকল সমস্যার সমাধান দিয়ে প্যাকেজ নোট তৈরি করে দেন যা মুখস্থ করে পরিক্ষার্থী এ পর্যন্ত পেয়ে সকলের প্রশংসা কুড়ায়। কিন্তু প্রকৃত জ্ঞান লাভ হয় না। এ প্রসঙ্গে বিশ্ব কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বলেন, – “ যে মুখন্ত করে এবং যে নকল করেতারা দুজনেই এক গোত্রের । প্রথম জন প্রাচীন পন্থীর, সে কষ্ট করে নকলটা মাথার মধ্যে ধারন করে রাখে । দ্বিতীয় জন আধুনিক , সে ছাপা খানার সাহায্য নিয়েছে। “ আমাদের মুখস্ত নির্ভর এবং সার্টিফিকেট সর্বস্ব বিদ্যা বাস্তব জীবনে কোন কাজে লাগে না। সনাতন শিক্ষা ব্যবস্থা শিক্ষানীতি সুলতানি-মোঘল-ব্রিটিশ- পাকিস্তানি এমনকি স্বাধীনতা উত্তর ৩৮ বছরেও কার্যকর রয়েছে। এ অবস্থার পরিবর্তন না হলে অম্ল-আনন্দ ,উন্নয়ন উন্নতি-সাম্য তথা আইনের শাসন ও সুশাসন সম্ভব নয়। আমাদের এমন একটি শিক্ষা ব্যবস্থা ও শিক্ষানীতি দরকার; যে মিক্ষা ব্যবস্থা শিক্ষার্র্থীকে কর্মযোগী ও নৈতিক আদর্শে অনুপ্রানিত ও উদ্দীপ্ত করবে। শিক্ষার নৈতিকতা সম্পর্কে প্লেটো বলেন- ‘শিক্ষা মানুষকে কোনটা ভালো আর কোনটা মন্দ তা চিনতে শেখায়। ‘ সক্রেটিস এর মতে , ‘শিক্ষার উদ্দেশ্য হলো সত্যের আবিষ্কার ও মিথ্যার অপনোদন।” আমাদের শিক্ষিত মানুষরাই ঘুষ-দূর্নীতি-মিথ্যাচার- প্রতারণার কাজে রত। তাই সকলের তরে সকলে আমরা প্রত্যেকে আমরা পরের তরে এ রকম নীতিবান মানুষ তথা পরহিতে ও পরমতে সহিঞ্চু মানুষ তৈরির লক্ষ্যে শিক্ষাব্যবস্থা ও শিক্ষানীতি ঢেলে সাজাতে হবে। মোটকথা যে শিক্ষার্থী বিত্ত বুদ্ধির পাশাপাশি চিত্তেরও বিকাশ ঘটায়্ সেই শিক্ষাই যুগোপযোগী এবং ইহাই দেশবাসীর কাম্য। এ উদ্দেশ্য বাস্তবায়নে পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ গুনীজনদের জীবনী পাঠ্যক্রমের অন্তভুক্ত করা যেতে পারে। এবং প্রত্যেক শিক্ষার্থীর অন্ততএকটি কারিগরি বিষয়ে জ্ঞান লাভ অপরিহার্য।
বিষয়সূচি
*ফিল্টেশন শিক্ষা পদ্ধতি ও আমাদের শিক্ষানীতি
* আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থা ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান
* অসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পরিচালনা ও ব্যবস্থাপনা পদ্ধতি
*আমাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কারিকুলাম-সিলেবাসও পাঠ্যপুস্তক
* আমাদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষদের পাঠদান ও কৌশল
* প্রাইভেট টিউশন ও কোচিং শিক্ষাদান পদ্ধতি উদ্ভাবনের কারণ , এর কুফল ও প্রতিকার
* শিক্ষা বানিজ্য ও শিক্ষা দূর্নীতি
* শিক্ষক ও তাঁর মর্যাদা
* ছাত্র ও ছাত্র-শিক্ষক সম্পর্ক
* বাঙালা ভাষার ভবিষ্যৎ
* উপসংহার