ফ্ল্যাপে লিখা কথা
তিন দেশের তিন ভাষার তিনজন শ্রেষ্ঠ লেখকের তিনটি বিশ্ববিখ্যাত দীর্ঘ ছোট গল্পের বাংলা অনুবাদ এখোনে পরিবেশিত হলো। রুশ, ফরাসি ও মার্কিন লেখক আন্তন চেকভ, গী দ্য মোপাসাঁ এবং আর্নেস্ট হেমিংওয়ে বিশ্বসাহিত্যের তিন কালজয়ী শিল্পী। এদের যে তিনটি রচনা এখানে সঙ্কলিত হলো তারাও বিশ্বসাহিত্যের অনুপম সম্পদ বলে সর্বজনীন স্বীকৃতি পেয়েছে। নানা ভাষায় এ গল্পগুলো অনূদিত হয়েছে। বাংলাতেও। তবু নতুন অনুবাদের চাহিদা ফুরিয়ে যায় নি। সেরা সাহিত্যকর্মের ক্ষেত্রে তাই ঘটে থাকে।
প্রচলিত মাপের ছোট গল্পের চাইতে এই রচনাগুলি আকারে দীর্ঘতর। অনেকে এ শ্রেণীর গল্পকে দীর্ঘ ছোট গল্প আখ্যা দিয়েছে, কেউ কেউ উপন্যাসিকা বাংলার পক্ষপাতী। আমার বিবেচনায় দীর্ঘ ছোট গল্প অভিধাই ঠিক।
চুম্বন, চর্বির ডেলা ও কিলিমাঞ্জেরোর তুষাররাশি তিনটি গল্পই নান্দনিক ঔজ্জ্বল্যে দ্যুতিময়। কাহিনী বিন্যাস, চরিত্র রূপায়ণ, মনস্তাত্বিক বিশ্লেষণ, বর্ণনার ঐশ্বর্য, সব কি থেকেই এই গল্প তিনটি অসামান্য হয়ে উঠেছে। তিনজন লেখকই ভিন্ন ভিন্নভাবে তাদের সৃষ্টিকর্মে মানবজীবনের ওপর তীব্র সন্ধানী আলো ফেলেছেন। চুম্বন-এ রোমান্টিকতা প্রাধান্য লাভ করেছে, চর্বির ডেলা-তে তীব্র শ্লেষের সঙ্গে বুর্জোয়া ভদ্রলোক ও তথাকথিত ধর্মনিষ্ঠ মানুষের নিষ্ঠুরতা ও কাপট্যের চিত্র উন্মোচিত হয়েছে, আর কিলিমাঞ্জেরোর তুষাররাশি-তে আকর্ষণীয় আঙ্গিক নৈপুণ্যের সাহায্যে উপস্থাপিত হয়েছে জীবন ও মৃত্যুর অবিচ্ছেদ্য সম্পর্ক এবং সাহিত্যের সৃজন প্রক্রিয়ার গভীর জটিল রহস্যময়তার বিষয়টি।