ফ্ল্যাপে লিখা কথা
গেট খুলে একজন পুলিশ ইন্সপেক্টর এগিয়ে এলেন। সঙ্গে সঙ্গে গাড়ি থেকে নামল মনজু। দেখুন আমি বাড়িতেই থাকি । কে নাকি খুন……। মনজুর কথা শেষ হওয়ার আগেই ইন্সপেক্টর বললেন, আপনার নাম? মনজুর হোসেন।
ইন্সপেক্টর সাহেব একটু থতমত খেলেন। আপনি আসুন। কিন্তু কে খুন হয়েছে কোন ফ্ল্যাটে?
আসুন বলছি।
মনজু মন্ত্রমুগ্ধের মতো ইন্সপেক্টরের সঙ্গে বাড়ির ভেতর ঢুকল। গাড়ি লক করা হয়নি। মনজুর সে কথা মনে নেই। বাড়ি ঢুকেই ইন্সপেক্টর বললেন, মুমু আপনার মেয়ে? মনজুর বুকটা ধ্বক করে উঠল। হ্যাঁ। কী হয়েছে মুমুর? মুমু তার মামাকে খুন করেছে।
এ্যাঁঃ
হ্যাঁ। নেসার আহমাদ সাহেবকে। ভারিফ্ল্যাওয়ারভ্যাস দিয়ে ঘাটের কাছে মেরেছে, বোধহয় কোনও সেনসেটিভ নার্ভে আঘাত লেলেছে। ভদ্রলোক সঙ্গে সঙ্গে মারা গেছেন। তাঁকে হাসপাতালে নেয়া হয়েছিল। ডাক্তাররা মৃত ঘোষণা করেছে। লাশ পোস্টমর্টেমে পাঠানো হয়েছে।
ইন্সপেক্টর সাহেব বললেন, আমরা আপনার জন্যে অপেক্ষা করছিলাম। মুমু একদম পাথর হয়ে আছে । কথা বলছে না। সঙ্গে সঙ্গে মনজুর ফিরে গেল অনেককাল আগে। মুমুর তখন চার পাঁচ বছর বয়স। ছাদের সিঁড়িতে বসে খেলা করছিল। পা ফসকে সিঁড়ি দিয়ে গড়িয়ে পড়ে গেল নিছে। পরেই অজ্ঞান। মনজু ছিল অফিসে। মুমুকে বুকে নিয়ে বকুল ছুটে গিয়েছিল হাসপাতালে। সেখান থেকে মনজুকে ফোন করেছিল। মনজু পাগলের মতো ছুটে গেছে হাসপাতালে। গিয়ে দেখে গেটের সামনে বকুল দাঁড়িয়ে আছে। কেঁদেকেট চোখ ভাসিয়ে ফেলেছে। জ্ঞান ফিরেছে মুমুর কিন্তু মুম কথা বলছে না। কথাটা শোনার সঙ্গে সঙ্গে মুমুর রুমের দিকে পাগলের মতো দৌঁড়ে গিয়েছিল মনজু।
এখন ঠিক তেমন হল। হঠাৎ করে পাগলের মতো সিঁড়ির দিকে দৌড়ে গেল মনজু। হায় হায় কী হয়েছে আমার মেয়ের কথা বলছে না কেন সে।