“চিম্বুক পাহড়ের জাতক-৩” ফ্ল্যাপে লিখা কথা চিম্বুক পাহাড়ের জাতক উপন্যাসটি তৃতীয় খণ্ড ধারণ করে আছে ইতিহাসের অন্ধকারে পড়ে থঅকা দশম-বারো শতকের বাংলার কৃষিভিত্তিক সমাজের ধুসর জীবনের চিত্র। রাজন্যবর্গ নয়,প্রজাবর্গই এর জগৎ বিশ্ব। রাজ-মহিমার মুগ্ধতাও এর বৃত্ত নয়। গণমানুষের অনন্তপ্রসারী দু:খ জাগতিক যন্ত্রণা, যা প্রচলিত ইতিহাস অস্বীকার তরেছে, তা-ই মুখর হয়েছে এখানে। জাগতিক দু:খ মুক্তির পথ হিসেবে মানুষের জীবন বিচ্ছিন্ন হরার আত্ননিগ্রহের গোলক ধাঁধার পথকেই নির্দেশ করেছে এ উপন্যাস। বৌদ্ধ ধর্মের অবক্ষয়ের পথ ধরৈ কায়াসাধন তখা কামরসের পথধরে শূণ্যতার ভেতর নির্বাণেরপরমানন্দের অন্ধকার যে পথ তার ভিতরই চরিত্রগুলোর বিচরণ। চারদিকে সমসুত কিছুর ভাঙনের আওয়াজ । ভয়াবহ সেই ভাঙনের পেষণে হগারিয়ে গেছে গণমানুষ।
প্রত্ননিদর্শন ওয়ালী বপেশ্বর আর ময়নামতি শালবন বিহারের অনিবার্য পরিণতির ভিতর উপন্যাসের কল্পিত চরিত্রগুলো প্রবহিত হয়েছে। এখানে প্রাচীন নগর সভ্যতার মুগ্ধতা নেই , আছে এর চরম পরিণতির ইংগিত । প্রাচীন পর্যাপদের পথ ধরে ই এগিয়েছে গীতিকার তার জীবন-দ্বন্দ্ব, প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তি আর দু:খ মুক্তির আড়ালে ক্রিয়শীল ক্ষুধা-দারিদ্র্য,ইতিহাসেরই প্রতি ইতিহাস হয়ে হাজির হয়েছে। উৎপাদশীল মানুষের উৎপাদন বিচ্ছি হয় মুক্তির নামে সর্বত্যাগি শ্রমণ-জীবন নির্দেশ করে কুয়াশার ভেতর মানুষের পলায়নকে। এ পলায়ন আত্নরক্ষা নয়, বরং স্বেচ্ছা আত্নহনন মাত্র। তাই আলোর বদলে অন্তহীন গভীর অন্ধারেই হাঁটতে হয় তাকে।অভিযাত্রা কি কেবল অজানা দু:খের দিকে না কি পরমানন্দের দিকে, উপন্যাসটির জিজ্ঞাসা সেখানেই।