বইটির ভূমিকা থেকে নেয়াঃ
সৃষ্টির আদিকাল হইতে কেবল এই উদ্দেশ্যেই আম্বিয়া আলাইহিমুসসালাতু ওয়াসসালাম। প্রেরিত হইয়াছিলেন যে, তাহারা আল্লাহ্ পাকের সম্পর্কহারা মানবজাতিকে ওয়ায-নসীহত এবং এরশাদ ও হেদায়তের সাহায্যে পুনরায় আল্লাহ্ তা’আলার সহিত তাহাদের সম্পর্ক স্থাপন করিয়া দিবেন। এই মর্মেই আল্লাহ্ তা’আলা বলেনঃ
أدع إلى سبيل ربك بالحكمة والموعظة الحسنة অর্থাৎ “[হে মােহাম্মদ (দঃ)] ! আপনি (বিভ্রান্ত মানব জাতিকে) সুন্দর নসীহত এবং হেকমতের সহিত আপনার প্রভুর পথের দিকে আহ্বান করুন।”
এই জন্যই যেসমস্ত ওলামায়ে কেরাম উক্ত উদ্দেশ্যকে স্বীয় জীবনের একমাত্র লক্ষ্যরূপে। অবলম্বন করিয়াছেন এবং উক্ত উদ্দেশ্য সাফল্যমণ্ডিত করার জন্য দুনিয়ার যাবতীয় লােভ-লালসা, ভয়-ভীতি ও তিরস্কার-ভৎসনার প্রতি ভূক্ষেপ না করিয়া দাওয়াতে হকের মশাল হাতে বিশ্বের আনাচে-কানাচে ছড়াইয়া পড়িয়াছেন, একমাত্র তাহারাই নবীর সত্যিকারের ওয়ারিস বলিয়া দাবী করিতে পারেন। এই পবিত্র ও মহান মনীষীদের বদৌলতে অসংখ্য ঝড়ঝঞা ও বাধা-বিঘ্নের মােকাবিলায় আজও পৃথিবীর বুকে ইসলামের মশাল প্রজ্বলিত রহিয়াছে। ইনশাআল্লাহ্, কিয়ামত পর্যন্ত ইহা প্রজ্বলিতই থাকিবে। এই প্রসঙ্গে হুযূর (দঃ) বলিয়াছেনঃ
هم من خذلهم
لايزال طائفة من أمتي منورين على الحق لأي অর্থাৎ “আমার উম্মতের এক দল সর্বদা সত্যের উপর সুপ্রতিষ্ঠিত থাকিবে। শত্রুপক্ষ তাহাদের। কোনই ক্ষতি করিতে পারিবে না। সুতরাং কোন শতাব্দী এবং কোন যুগই এই পবিত্র সত্যপন্থীর দল হইতে শূন্য থাকিতে পারে না, প্রত্যেক যুগেই ইহাদের এক দল বিদ্যমান থাকিয়া ইসলাম প্রচার করেন এবং আল্লাহ্ পাকের বাণীকে সর্বোচ্চে তুলিয়া ধরার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করেন। | হিজরী চতুর্দশ শতাব্দীতে হযরত মাওলানা আশরাফ আলী থানবীর (রঃ) [জন্ম-১২৮০ হিঃ, মৃত্যু-১৩৬২ হিঃ] মহান ব্যক্তিত্ব ছিল এই খােদায়ী সাহায্যপ্রাপ্ত দলের শিরােমণি। সমগ্র জগত তাহাকে হাকীমুল উম্মত (আত্মার চিকিৎসক) এবং মুজাদ্দিদুল মিল্লাত (যুগ-সংস্কারক) আখ্যায় আখ্যায়িত করিত। এই আখ্যা বাস্তবিকই তাহার প্রাপ্য ছিল। তঁাহারই মহামূল্য ও অমর অবদান ওয়াযসমূহের কতিপয় ওয়ায বাংলাভাষায় অনুবাদ করিয়া বাংলাভাষী ভাইদের খেদমতে পেশ করা হইতেছে…..