ভূমিকা
বাংলাদেশে সাহিত্য সাংবাদিকতার জগতে প্রবীণ ও শীর্ষস্থানীয় যাঁরা এখনও ক্ষুরধার লেখনীর মাধ্যমে বর্তমান অবক্ষয়গ্রস্থ জাতিকে উজ্জীবিত করতে নিরলস সাধনা করে যাচ্ছেন তাঁদের মধ্যে অন্যতম হলেন আমাদের পরম শ্রদ্ধেয় গুরুজন- মাওলানা মুহিউদ্দীন খান। তিনি শুধু মাত্র একজন আলেম হিসেবেই নিজেকে সীমাবদ্ধ রাখেননি বরং ধর্মীয় সাহিত্য, সাংবাদিকতা রাজনৈতিক নেতৃত্ব বা রাজপথের সংগ্রামী আন্দোলন, সামাজিক নেতৃত্ব , একজন ব্যবসায়ী, সমাজসেবক, আন্তর্জাতিক সংগঠক ইত্যাদি বহুবিধ কর্মকাণ্ডের সাথেই ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছেন তিনি।
বাংলা ভাষায় সীরাত চর্চা প্রবর্তন, কোরআনের বৃহত্তম ও সর্বাধুনিক একখানা তফসীর গ্রন্থের অনুবাদ, ইসলামের মৌলিক বিষয়সমূহের দুষ্প্রাপ্য ও উচ্চাঙ্গের কিতাবাদী সহজ সরল প্রাঞ্জল ভাষায় সকলের বোধগম্য করে প্রকাশের অনন্য নজীরও স্থাপন করেছেন তিনি। তাই তাঁর লেখা পাঠের অদম্য আগ্রহ নিয়ে দেশে বিদেশে অপেক্ষমান থাকেন তাঁর লক্ষ লক্ষ ভক্ত পাঠকবৃন্দ।তাঁর সম্পাদিত বাংলাভাষায় দুই বাংলায় সর্বাধিক প্রচারিত সাহিত্য ও সংস্কৃতি বিষয়ক পত্রিকা মাসিক মদীনও স্বদেশ ও বিশ্বে ব্যাপক পাঠকপ্রিয়তা লাভ করেছে। এ কারণে মওলানা মুহিউদ্দীন খান সম্পর্কে বিশদভাবে জানার আগ্রহ তাঁর অগণিত ভক্ত কুলের। ব্যক্তিগত নানা প্রশ্ন ও তাগিদের ফলেই তিনি এ গ্রন্থে নিজের শৈশব থেকে শুরু করে ক্রমান্বয়ে জীবনের মধ্যাহ্নকাল পর্যন্ত নিজের জীবন ও অভিজ্ঞতার বর্ণনা দিয়েছেন অত্যন্ত হৃদয়গ্রাহী ও আবেগময় ভাষায়।
বৃটিশ-পাকিস্তান ও বাংলাদেশ ঘটনাবহুল ও ঐতিহাসিক এ সময়কে চাক্ষুষ করেছেন তিনি। নিজের এ বৈচিত্র্যময় অভিজ্ঞতারই ফসল-জীবনের খেলাঘরে। একটি ছোট্র শিশুর বেড়ে ওঠা, কৈশোররের সূচনায় সবচেয়ে বড় আশ্রয় মমাকে হারানোর বেদনা, বৃটিশ শাসনে মুসলমানদের প্রতি শোষণ ও বঞ্চনা, সে সময়ের নেতৃ পুরুষদের সংগ্রামী জীবন ও কর্ম এসবই আলোড়িত করেছেন তাঁকে। তাঁর এ বই তাই কিশোর, তরুণ, যুবক, বৃদ্ধ সবাইকে নাড়া দেবে, অনুপ্রাণীত করবে সমভাবে।
ইতোপূর্বে সাপ্তাহিক মুসলিম-জাহানে ধারাবাহিকভাবে ‘জীবনের খেলাঘরে’ প্রকাশের পর থেকে দাবী উঠে এটি বই আকাশে প্রকাশ করার। পাঠকের সে দাবীর প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েই এটি বই আকাশে প্রকাশিত হল। পাঠকের ভাল লাগলে আমাদের এ শ্রম সার্থক হবে।