সূচীপত্রঃ
ভূমিকা………………………………০৫
আল কুরআন ও আধুনিক বিজ্ঞান ॥ ডঃ মরিস বুকাইলি…….০৯
আল কুরআনে ভ্রূণতত্ত্ব ॥ ডঃ কীথ এল. মূর………………………………২৯
আল কুরআনঃ এক মহাবিস্ময় ॥ গ্যারি মিলার…………………………..৩৪
পরিশিষ্ট ৷৷ খোন্দকার রোকনুজ্জামান
বিস্ময়ের সেকাল………..৬৯
বিস্ময়ের একাল…………………………………………………………………..৭৪
ভূমিকা:
‘আল কুরআন: এক মহাবিস্ময়’ বইটিতে প্রায় দেড় হাজার বছরের প্রাচীন গ্রন্থ আল কুরআনকে আধুনিক বিজ্ঞানের মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে দেওয়া হয়েছে। মজার ব্যাপার বটে! একটি প্রাচীন, অপরটি আধুনিক; একটি দাবী করে বিশ্বাস, অন্যটির দাবী প্রমাণ। অথচ অবাক করা ব্যাপার হল, মুখোমুখি দাঁড়িয়ে একে অন্যের চোখের গভীরে নিজেকেই পরিষ্কারভাবে দেখতে পাচ্ছে।
বইটি আকারে ছোট; কিন্তু লেখকত্রয়ের পাণ্ডিত্য এবং অসাধারণ বিশ্লেষণী শক্তির নমুনা এর প্রতিটি পাতায় ভাস্বর। ড. বুকাইলি, ড. মূর ও ড. গ্যারি মিলার এমন সমাজে জন্মেছেন ও লালিত হয়েছেন, যেখানে বিজ্ঞানের বিজয়-কেতন উড়েছে বহুকাল আগে। সে সমাজে কোন কিছু গ্রহণ করার আগে বিজ্ঞানের কষ্টিপাথরে যাচাই করা হয়; ধর্ম-বিশ্বাসকেও এর ঊর্ধ্বে মনে করা হয় না। এই বৈজ্ঞানিক বস্তুনিষ্ঠতার সাহায্যে তাঁরা আল-কুরআনকে বিশ্লেষণ করেছেন। ফলাফল যা এসেছে, তাকে তাঁরা বৈজ্ঞানিক সততা দিয়ে মেনেও নিয়েছেন আল কুরআন ও বিজ্ঞানের তুলনামূলক আলোচনার শুরুতেই কয়েকটি বিষয় ভালমত বুঝে নেওয়া দরকার।
প্রথমত, আল কুরআন বিজ্ঞানের গ্রন্থ নয়। এটি মূলত ইহলৌকিক জীবন-পথের দিশা ও পারলৌকিক কল্যাণের দিকনির্দেশনা দানকারী গ্রন্থ। অতএব, এতে বৈজ্ঞানিক তথ্য সেভাবে আশা করা ভুল হবে, যেভাবে কোন বিজ্ঞান-শাস্ত্রে তা উল্লেখিত হয়। এই মহাগ্রন্থে বিজ্ঞান বিষয়ক তথ্য এসেছে মূলত সৃষ্টি জগতের প্রতি আল্লাহর অনুগ্রহ, তাঁর কুদরত ও সৃষ্টিকুশলতার উল্লেখ প্রসঙ্গে। চিন্তাশীল মানুষকে এইসব বিষয় নিয়ে গবেষণা করতে উদ্বুদ্ধ করা হয়েছে আর তাদের পথনির্দেশ দিতে অল্প কথায় বৈজ্ঞানিক তথ্য। পেশ করা হয়েছে। যুক্তি-বুদ্ধির দাবী তো এটিই। যে গ্রন্থ শত সহস্র বছর ধরে পঠিত হবে, যে গ্রন্থের পাঠক শিক্ষিত-অর্ধশিক্ষিত লোক, বিজ্ঞান-বাণিজ্য-কলার ছাত্র-ছাত্রী যে গ্রন্থ পাঠ করবে, সে গ্রন্থে বিজ্ঞানের জটিল বিশ্লেষণ কাম্য হতে পারে কি?
দ্বিতীয়ত, আল-কুরআনের বৈজ্ঞানিক তথ্য সংক্ষিপ্ত হলেও মোটেই অস্পষ্ট বা দ্ব্যর্থবোধক নয়। অন্তরের সমস্ত অবজ্ঞা ও বিদ্বেষ ঝেড়ে ফেলে মুক্তমনে এসব আয়াত পাঠ করলে একথা স্বীকার করতেই হবে যে, এখানে যা বলা হয়েছে তা পরিষ্কারভাবেই বলা হয়েছে। কোনরূপ গোঁজামিলের নামগন্ধও এখানে নেই। নিচের কয়েকটি উদাহরণ লক্ষ্য করলেই পাঠক এই কথার সত্যতা উপলব্ধি করতে পারবেন: ‘পথবিশিষ্টি আসমানের কসম’। (সুরা আয্ যারিয়াত : ০৭)
‘আকাশমণ্ডল আমি আপন ক্ষমতায় সৃষ্টি করেছি আর নিশ্চয় আমি তা সম্প্রসারিত করে চলেছি।’ (সূরা আয্ যারিয়াত : ৪৭) “আল্লাহ্ সমস্ত প্রকার প্রাণিকে সৃষ্টি করেছেন পানি থেকে।’ (সূরা আন নূর :৪৫)