‘গর্ভধারিণী’ বইয়ের ফ্ল্যাপের কথাঃ
এক দুঃসাহসী ও অভিনব বিষয়বস্তু নিয়ে, সামাজিক ও মানবিক মূল্যবোধ নিয়ে নতুন পরীক্ষার ফলশ্রুতি এই গর্ভধারিণী উপন্যাস। অসম অর্থনৈতিক কাঠামোয় বড় হয়ে ওঠা চার বন্ধু, তাদের মধ্যে একজন নারী, এক সময়ে উপলব্ধি করল অদ্ভুত এক আঁধার নেমে এসেছে এই দেশে। কারও যেন নিজস্ব কোন দায় নেই, দেশটার ভালোমন্দের ইজারা রাজনৈতিক দলগুলির ওপর দিয়ে অধিকাংশ মানুষ ঘরের নিরাপদ কোণ খুঁজছে। এই ক্লৈব্যের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে চেয়েছে ঐ চারজন যুবক-যুবতী, পরিণামে তাদের আত্মগোপন করতে হলো হিমালয়ের কোণে এক পাহাড়ী গ্রামে, যেখানে সভ্যতার নখ এখনো আঁচড় কাটেনি। সেখানে শুরু হলো তাদের একজনের- যে একমাত্র নারী তাদের দলে, তার-বিচিত্ৰ আত্মত্যাগ ও সাধনা। এই উপন্যাস তাদের সকলের সেই স্বপ্ন, সাধনা ও সংগ্রামের কাহিনী।
লেখক পরিচিতিঃ
সমরেশ মজুমদারের জন্ম হয় ১৯৪২ সালে, বাংলা ১৩৪৮ সালের ২৬শে ফাল্লুন। শৈশব কেটেছে ডুয়ার্সের চা বাগানে। স্কুলের ছাত্রজীবন কেটেছে জলপাইগুড়িতে। এইসময়কার কিছু চিত্র পাওয়া যায় তার উত্তরাধিকার উপন্যাসে। কলেজ জীবন কেটেছে স্কটিশ চার্চ কলেজ ও কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে। প্রথমে গ্রুপ থিয়েটার ও নাটক লেখা থেকে গল্প লেখা শুরু। প্রথম গল্প প্রকাশিত হয় ১৯৬৭ সালে। প্রথম উপন্যাস দৌড় প্রকাশিত হয় ১৯৭৫-এ। তাঁর প্রতিটি উপন্যাসের বিষয়, গল্প বলার ভঙ্গি ও আঙ্গিক গতানুগতিকতার একঘেয়েমি থেকে মুক্ত। এই কারণেই বাংলা সাহিত্যের পাঠক-পাঠিকারা তার প্রায় প্রথমা আবির্ভাবেই তাঁকে সাদরে বরণ করে নিয়েছেন। ১৯৮২ সালের আনন্দ পুরস্কার, ‘দৌড়’ চলচ্চিত্রের কাহিনীকার হিসেবে বিভিন্ন পুরস্কার ও ১৯৮৪ তে কালবেলা’ উপন্যাসের জন্য আকাদেমী পুরস্কার তাঁর অনন্য সাহিত্য-কৃতিরই অকুণ্ঠ স্বীকৃতি।