“ইতিহাসের উত্তরাধিকার” বইয়ের ফ্ল্যাপের লেখা:
রাষ্ট্র, জাতীয়তা ও ইতিহাস-চর্চায় এই গ্রন্থের লেখক নিজেকে দীর্ঘদিন ধরে যুক্ত রেখেছেন। নানা মনন-ঋদ্ধ প্রবন্ধে এই বিষয়ে তিনি ব্যক্ত করেছেন তাঁর স্পষ্ট ও ঋজু অভিমত। ‘ইতিহাসের উত্তরাধিকার’ তাঁর সেইসব ভাবনার একটি পরিপূর্ণ সংকলন। লক্ষণীয় এই যে, মার্কসীয় দর্শন সম্পর্কিত নানা বিষয়ে কথা বললেও, আধুনিক রাষ্ট্রদর্শনের মূল প্রতিপাদ্যগুলাে নিয়ে মার্কসবাদী চিন্তাবিদরা কোনও মৌলিক আলােচনাই করেননি লেখক। রাষ্ট্রদর্শন নিয়ে মার্কসের লেখায় ফিরে গিয়ে নতুন দিশার অন্বেষণ করেছেন। বিংশ শতাব্দীর সমাজতান্ত্রিক চিন্তায় রাষ্ট্র সম্বন্ধে কী ভাবা হয়েছে? এ প্রশ্নের সঠিক ও নির্মম জবাব—বিশেষ কিছুই ভাবা হয়নি। বিভিন্ন সমাজতান্ত্রিক দেশে এই ধারণাই দৃঢ়বদ্ধ যে, রাষ্ট্রবিন্যাস কাজ চালানাের মতাে একটা সাময়িক ব্যবস্থা। লেখকের মতে, আগামী শতাব্দীতে যদি কোনও এক নতুন সমাজতান্ত্রিক ব্যবস্থা গড়ে ওঠে, তবে তা হবে। প্রশাসন ও বিশেষজ্ঞ-নির্ভরতার বেড়াজাল ছিন্ন করে। একই সঙ্গে নতুন কোনও রাজনৈতিক আন্দোলনের পথে জাতীয়তা নিয়ে তাঁর প্রস্তাব—গণতন্ত্রের প্রসার ঘটাতে গেলে ভারতের বর্তমান যুক্তরাষ্ট্রীয় ব্যবস্থার ব্যাপক পুনর্বিন্যাস প্রয়ােজন। এই পুনর্নির্মাণের কাজে দলিত মানুষজন আগামী দিনে নির্ণায়কের ভূমিকা নেবে। ইতিহাস সংক্রান্ত প্রবন্ধগুলিতে ঘুরে ফিরে এসেছে। পুঁজি, কৌমচেতনা, জাতীয়তা, রাষ্ট্র। আর একটি প্রেক্ষিত সেইসঙ্গে যুক্ত হয়েছে—প্রাচ্য-পাশ্চাত্যের জটিল সংঘাতপূর্ণ অথচ গভীর অনুরাগময় সম্পর্ক।