“বেগম মেরী বিশ্বাস (অখণ্ড)” বইয়ের ফ্ল্যাপের লেখা:
বিমল মিত্রের এই সুদীর্ঘ ঐতিহাসিক উপন্যাসে এমন এক সময়ের কথা বলা হয়েছে, যখন সমগ্র হিন্দুস্থানে একটা বিরাট অবক্ষয়ের প্রবল স্রোত বহমান; দিল্লির বাদশা ক্ষমতাহীন, বীরের জাত রাজপুতরা নির্বীর্য, সিংহবিক্রম মরাঠারা ক্লান্ত এবং পূর্বপ্রান্তে বিদেশি বণিকরা চক্রান্তে লিপ্ত। ইতিহাসের সেই সন্ধিক্ষণে একটি সামান্য মেয়ে বাংলার হাথিয়াগড়ের মতাে এক অখ্যাত জনপদ থেকে বেরিয়েছিল ঘটনাচক্রের অমােঘ বিধানে। তার বিদ্যা ছিল না, বুদ্ধি ছিল না, সহায় সম্বল কিছুই ছিল না। সে বেপরােয়া নয়, তবে আত্মবিশ্বাসী। ভাবীকালের ইতিহাস-বিধাতা তাকে আশা-ভরসাহীন এক অবক্ষয়ের ঘূর্ণিতে যেন ছুড়ে ফেলে দিলেন। মেয়েটি হারিয়ে গেল না, বরং ঘুরে দাড়াল। তারপর কেমন করে যেন হিন্দুস্থানের রাষ্ট্রবিপ্লবের সঙ্গে একাত্মভাবে জড়িয়ে গেল তার ভাগ্য। চোখের সামনে ভাগ্যবিধাতার পরিহাস দেখল সে, অর্থগৃধুতার চরম বিকাশ দেখল, লালসার অনির্বাণ জ্বালানল দেখল। তারপর একদিন এই আগুনে আত্মাহুতি দিল মেয়েটি। এপিকধর্মী এই ঐতিহাসিক উপন্যাস ‘বেগম মেরী বিশ্বাস’ সেই সাধারণ মেয়েটিকে উপলক্ষ করে অষ্টাদশ শতাব্দীর বাংলা দেশের রাষ্ট্রবিপ্লবের এক বিপুল বিচিত্র ও মহান চিত্রায়ণ।