“বাউণ্ডুলে-১১” বইয়ের শেষ ফ্ল্যাপ এর লেখা:
যারা জীবনের শুরুতেই ঝড়, জল, কাদামাটিকে সঙ্গে করে বাঁচতে শেখে, তারা হয় অনেক বেশী দৃঢ়চেতা, সাহসী আর কর্মনিষ্ঠ। সুমন্ত আসলামও এর ব্যতিক্রম নয়। আর তাই তাে অনেক প্রতিকূলতা পেরিয়ে সুমন্তর কলম এখনও কথা বলে—মানুষের পক্ষে। সমকালের সাপ্তাহিক ম্যাগাজিন ‘প্যাচআল’-এর শেষ পাতায় এখনও তার বাউণ্ডুলে স্বমহিমায় উজ্জ্বল। শুধু তা-ই নয়, সহজ-সরল ভাষায়ও যে জীবনের গল্প বলা যায়, ছুঁয়ে দেওয়া যায় পাঠকের কোমল অনুভূতিগুলাে, সেটা প্রমাণ করেছে সুমন্ত । ছােটগল্প কিংবা উপন্যাস, সব ধরনের লেখনীতেই তার নিজস্ব ঢং মুগ্ধ করে আমাদের। তার লেখা গল্পগুলাে নিজেদের জীবনের সঙ্গে মিলিয়ে নিয়ে আমরা কখনও হাে হাে করে হেসে উঠি, কখনও বা চোখ মুছি গােপনে। আমরা, যারা সুমন্তকে অনেকদিন ধরে জানি—মাঝে মাঝে বিভ্রান্ত হই। ‘রাশীক’ কিংবা ‘দন্ত্যন রুহমানকে নিয়ে। সুমন্তর সৃষ্ট এই চরিত্রগুলাে কি লেখককেই ধারণ করে না অনেকখানি? আমাদের প্রশ্ন শুনে যথারীতি হাসে সুমন্ত-রহস্যময় হাসি। পর মুহূর্তে যখন আড্ডার মধ্যমণি হয়ে সুমন্ত মাতিয়ে রাখে আমাদের, তখন আবার ওর মধ্যেই খুঁজে পাই ওরই সৃষ্ট মজার উপন্যাসের কোনাে চরিত্রকে। তার লেখা কিশাের উপন্যাসের কোনাে ডানপিটে চরিত্র আমাদের সামনে ফিরিয়ে আনে সেই দুরন্ত কিশাের সুমন্তকে। সব কৌতূহল, সব বিশেষণ শেষ করে আমরা যখন উপসংহারে পৌছাই তখন অবাক হয়ে দেখি আমাদের পাশে আমাদের সেই বন্ধু-অভিমান, রাগ, ভালােবাসা সব একাকার হয়ে মিশে আছে যার সত্তায় । নাগরিক ব্যস্ততা আজকাল চুরি করে নেয় আমাদের অবসর। মুঠোফোনে কুশল বিনিময়ে তাই সন্তুষ্ট থাকতে হয় অধিকাংশ সময়। তবু কোনাে কোনাে শীতের রাতে বনভােজনের হঠাৎ আয়ােজনে ফিরে আসে আমাদের সেইসব দিন, অনিশ্চয়তায় ভরা মধুর সেই সব দিন। হাজার ব্যস্ততা উপেক্ষা করে, আমাদের সব আশংকাকে মুছে দিয়ে সেখানেও ঠিক ঠিক হাজির হয় সুমন্ত । সামনে জ্বলতে থাকা আগুনের কুণ্ডলীতে হাত সেঁকতে সেঁকতে একই রকম আন্তরিক গলায় বলে, ‘বন্ধু কী খবর, বল!’ |