“কবি ও কামিনী” বইটির প্রথম ফ্ল্যাপ-এর লেখাঃ
‘আরবদের কাছে কবিতার চাইতে প্রিয় আর কিছু নেই। কবিতার প্রতি তাদের এই অন্ধ ভালােবাসা দেখে বিস্মিত হয়ে পারস্যের এক মনীষা বলেছিলেন, আরবদের ত্বকের নিচের শিরা দিয়ে রক্ত নয়, বয়ে চলে কবিতার স্রোত। আরবের এই ঋদ্ধ ঐতিহ্যের সর্বশ্রেষ্ঠ কবিপুরুষ ছিলেন ইমরুল কায়েস। ইসলাম-পূর্ব যুগের এই কবির কবিতা আজও সমানভাবে জনপ্রিয়, এমনই আশ্চর্য প্রতিভা ছিলেন তিনি। ইমরুল কায়েস যেমন ছিলেন তাঁর যুগের কবিশ্রেষ্ঠ, তেমনি ছিলেন বীর যােদ্ধা, প্রেমিক আর দুর্ধর্ষ। তাঁর হস্ব জীবন রহস্য, প্রাচুর্য আর ঘটন-অঘটনে পূর্ণ। দেড় হাজারেরও বেশি বছর আগের প্রাচীন এই বিস্ময়প্রতিভা নিয়ে এক আশ্চর্য-আখ্যান লিখেছেন একুশ শতকের বাঙালি লেখক জাকির তালুকদার। যদিও কবির সৃষ্টি ও প্রেম এই আখ্যানের কেন্দ্র, কিন্তু এর আড়ালে লেখক ছবির মতাে জীবন্ত করে তুলতে চেয়েছেন কবির সমসময় ও পরিপার্শ্বকে, যেখানে চিত্রিত হয়েছে তৎকালীন আরবের আর্থ-সামাজিক ও রাজনৈতিক পরিস্থিতি; গােত্র, দাসপ্রথা ও শ্রেণিসম্পর্ক; নর-নারীর সম্পর্ক; প্রেম, যৌনতা, ঈর্ষা; ঘৃণা, যুদ্ধ, হিংসা। অন্ধকার-সময়ের এমন এক উপাখ্যানকে ঘিরে রচিত জাকির তালুকদারের এই বই, কবি ও কামিনী, আলােকিত করল তার সৃষ্টিক্ষমতাকেই।