“উত্তরাধিকার” বইটিতে লেখা ফ্ল্যাপের কথাঃ এই উপন্যাসের কাহিনীর শুরু উত্তরবঙ্গের একটি চা-বাগানের পটভুমিকায়। ১৯৪৭ সালের পনেরই আগস্টে আমাদের প্রথম স্বাধীনতা দিবস উদ্য়াপনের সময় অনিমেষ নামে একটি কিশোর প্রথম শুনেছিল ‘বন্দেমাতরম্’ শব্দটি। শব্দটির অর্থ পুরোপুরি উপলব্ধি করতে না পারলেও তার ধ্বনি-ব্যঞ্জনা তার মনকে নাড়া দিল। এই শব্দটির ভিন্ন ভিন্ন ব্যাখ্যা আর তার মূল্য বুঝতে না বুঝতে সেই কিশোর হয়ে উঠল সদ্য তরুণ। তারপর সেই তরুণ উচ্চশিক্ষার জন্য এল কলকাতায়। সেইদিন সারা শহরে আগুন জ্বলছে- এক আন্দোলনের ভয়ঙ্কর পরিবেশ। নিজের সম্পর্কে, দেশের সম্পর্কে পুরনো বিশ্বাস, শ্রদ্ধা-ভালবাসার সঙ্গে নতুন করে তার মুখোমুখি পরিচয় শুরু হল। এই কাহিনী সেদিনকার সেই কিশোর তরুণ অনিমেযের আত্ম-অনুসন্ধানের কাহিনী। বাংলা সাহিত্যের বর্তমান কথাশিল্পীদের মধ্যে সমরেশ মজুমদার অগ্রগণ্য। তাঁর বিশিষ্ট রচনাশৈল্পীদের জন্য একতম বেললেও অন্যায় হবে না। ইতিপূর্বে তাঁর অন্য উপন্যাসে পাঠকেরা সে পরিচয় পেয়েছেন। ‘উত্তরাধিকার’ উপন্যাসে তিনি এবার নিজেকেও অতিক্রম করে গেছেন। এই ধরনের ঘরোয়া গল্পে অনুপম প্রসাদ-গুণে ভরা মনোমুগ্ধকর রচনার মধ্যে একালের তরুণের জীবন-জিজ্ঞাসাকে মূর্ত করে তোলার দৃষ্টান্ত বাংলা সাহিত্যে অতি বিরল। ১৯৮৪ সালে অকাদেমি পুরস্কারে সম্মানিত হয়েছে নায়ক অনিমেষের মধ্যজীবন-পর্বের কাহিনী, যে জীবনের উন্মেষ হল এই ‘উত্তরাধিকার’ গ্রন্থে।