ফ্ল্যাপে লিখা কথা
পুরুষপ্রধান সমাজে নারীর পায়ে পায়ে বাধা; তার জগৎসংসার সংকটময়। এমনকি উচ্চশিক্ষিত কর্মজীবী নারীর নিয়তিও যেন এর ব্যতিক্রম নয়। এ উপন্যাসের কেন্দ্রীয় চরিত্র মণি রূপে-গুনে আকর্ষণীয়া, নামী প্রতিষ্ঠানের ঊর্ধ্বতম কর্মকর্তা। ঘরে-বাইরে ও কর্মস্থলে তিনি নানাবিধ পীড়ন ও সহিংসতার শিকার। পুরুষ-সহকর্মীর অথৈনিক আহ্বানে সাড়া দিতে অপারগ মণিকে মুখোমুখি হতে হয় বিরুদ্ধ পরিস্থিতির। অপরদিকে মদ্যপ স্বামীর কুৎসিত আচরণও তাঁর জীবনকে বিপর্যস্ত করে তোলে। অরক্ষিত নারীর বিপদ সম্পর্কে সম্পূর্ণ সচেতন এ মানবীর কোমল মন আঘাতে আঘাতে পরিণত হয় কঠিন প্রস্তরে। যদিও আমরা জানি, সর্বংসহা প্রকৃতির মতোই একাকী নারীর পাথরপরানের গভীরেও ফোটে ফুল; যে ফুল মুক্ত, বিকশিত, সৌগন্ধ ছড়ানো সফল জীবনেরই অন্য নাম।
মনোচিকিৎসক হিসেবে মানবচরিত্র পর্যবেক্ষণ ও বিশ্লেষণের অভিজ্ঞতাকে লেখক উপভোগ্য ভঙ্গিতে ব্যবহার করেন তাঁর উপন্যাসের চরিত্র সৃষ্টিতে। লেখকের সৃষ্ট কেন্দ্রয়ি চরিত্রের গতিপ্রকৃতিতে আদর্শবাদিতা ও ইতিবাচকতা লক্ষ্য করা যায়। চারপাশের বিরূপতা ,কদর্যতা ও নেতিবাচকতাকে উজিয়ে জয়ী হয় সে জীবন। এই উপন্যাসও অনুরূপ বৈশিষ্ট্য সমুজ্জ্বল। উপন্যাসটি পাঠককে ,বিশেষভাবে নারী পাঠককে আনন্দ, শক্তি ও প্রেরণা দেবে বলেই আমাদের বিশ্বাস। একই সঙ্গে পুরুষের নারী-নির্যাতনবিরোধী মনোভাব তৈরিতেও ভূমিকা রাখবে।