কয়েক দশকের ধারাবাহিকতায় আমরা এসে পৌঁছেছি এমন এক সময়ে, আমরা তৈরি করেছি এমন এক সময় যে সময় পরিমলের। এখন বা এইক্ষণ তাই হয়ে উঠেছে পরিমলের।
পরিমল ধর্ষক। একই সঙ্গে সে অনৈতিক, মিথ্যুক, বিশ্বাস ভঙ্গকারী। পরিমল নির্মম ও নিষ্ঠুর। সে নৈরাজ্যের সূচক। এ সমাজ পরিমলের রূপ পেয়েছে। এ সময়কে বুঝতে হলে তাই পরিমলকে বুঝতে হয়। পরিমল যেমন অন্ধ ও বোধহীন পুরুষাঙ্গ, শারীরিক ও মানসিক উভয় অর্থে পুরুষাঙ্গ সর্বস্বতার প্রতীক, আমাদের এই সমাজ এই চারপাশ তেমন পরিমলের প্রতীক। আমরা বিস্ময়ে বিমূঢ় যেমন হই, সন্ত্রস্তও হই, যখন দেখি আমাদের চারপাশ এক অন্ধ পুরুষাঙ্গের অনুগত হয়ে আছে।
এক অদ্ভুত বয়ান কৌশলে এই রচনাটি রচিত। এই উপন্যাসটি শুরু হয় এক লেখকের উপন্যাস রচনা শুরুর মধ্য দিয়ে। তারপর পাঠক খেয়ালও করেন না, কখন কী সহজে সব চরিত্র মিলেমিশে গেছে। কোনটি স্বয়ং লেখক, কোনটি বাস্তব জীবনের কেউ, কোনটি উপন্যাসের কাল্পনিক চরিত্র, এর আর ভেদাভেদ থাকে না। পাঠক এর কারণে সমস্যা বোধ করবেন না, বরং ক্রমান্বয়ে টের পাবেন, এ সময়কে ধরার জন্য এর চেয়ে অধিকতর উপযোগী বয়ান কৌশল আর কিছু হতে পারে না!
বাংলা সাহিত্যে এ উপন্যাস স্বাতন্ত্র্য মর্যাদায় সব সময়ই বিবেচিত হবে।