ফ্ল্যাপে লেখা কিছু কথা
অন্ধ ভূমিগর্ভ হতে শুনেছিলে সূর্যের আহ্বান প্রাণের প্রথম জাগরণে, তুমি বৃক্ষ, আদিপ্রাণ, উর্ধ্বশীর্ষে উচ্চারিলে আলোকের প্রথম বন্দনা ছন্দোহীন পাষাণের বক্ষ-‘পরে; আনিলে বেদনা নিঃসাড় নিষ্ঠুর মরুস্থলে।সেদিন অম্বর-মাঝে শ্যামে নীলে মিশ্রমন্ত্রে স্বর্গলোকে জ্যোতিষ্কসমাজে মর্তের মাহত্ন্যগান করিলে ঘোষণা। যে জীবন মরণতোরণদ্বার বারম্বার করি উত্তরণ যাত্রা করে যুগে যুগে অনন্তকালের তীর্থপথে নব নব পাস্থশালে উড়াইলে নিঃশঙ্ক গৌরবে অজ্ঞাতের সম্মুখে দাঁড়ায়ে। তোমার নিঃশব্দ রবে প্রথম ভেঙেছে স্বপ্ন ধরিত্রীর, চমকি উল্লাসি নিজেরে পড়েছে তার মনে-দেবকন্যা দুঃসাহসী কবে যাত্রা করেছিল জ্যোতিঃস্বর্গ ছাড়ি দীনবেশে পাংশুম্লান গৈরিকবসন-পরা, খণ্ড কালে দেশে অমরার আনন্দেরে খণ্ড খণ্ড ভোগ করিবারে, দুঃখের সংঘাতে তারে বিদীর্ণ করিয়া বারে বারে নিবিড় করিয়া পেতে। মৃত্তিকার হে বীর সন্তান, সংগ্রাম ঘোষিলে তুমি মৃত্তিকারে দিতে মুক্তিদান মরুর দারুণ দুর্গ হতে’ যুদ্ধ চলে ফিরে ফিরে; সন্তরি সমুদ্র-উর্মি দুর্গম দ্বীপের শূন্য তীরে শ্যামলের সিংহাসন প্রতিষ্ঠিলে অদম্য নিষ্ঠায়, দুন্তর শৈলের বক্ষে প্রস্তরের পৃষ্ঠায় পৃষ্ঠায় বিজয়-আখ্যানলিপি লিখি দিলে পলব-অক্ষরে ধুলিরে করিয়া মুগ্ধ, চিহ্নহীন প্রান্তরে প্রান্তরে ব্যাপিলে আপন পন্থ…….
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর