ভূমিকা
আমি বাংলাদেশের মানুষ এবং আমার পরিচয় বাংলাদেশীহিসে। আমার দেশগত, অস্তিত্বের সঙ্গে আমার নিজের অস্তিত্ব বিজড়িত। সে জন্য আমি দেশসত্তাকে খুব বড় করে দেখি। বিদেশে যেখানেই গিয়েছি সেখানেই বিভিন্ন দেশের মানুষকে তাদের দেশের পরিচয়েই জেনেছি। সভ্যতার বিকাশের সঙ্গে সঙ্গে গোত্রগত বা এথনিক পরিচয়ে মানুষের পরিচয় যে নয় সেটা জানতে শিখেছি। কিন্তু দুর্ভাগ্য ক্রমে আমাদের দেশের বাংলাদেশী পরিচয়টি আড়াল করবার একটা অবিমৃষ্য চেষ্টা আমি আমাদের দেশের অনেকের মধ্যে লক্ষ্য করেছি এবং মানসিক ভাবে পীড়িত বোধ করেছি। উক্ত নিপীড়ন থেকে রক্ষা পাবার জন্যই আমার বর্তমান গ্রন্থটি রচনা।
আমি গ্রন্থটি নামকরণ করেছি ‘আমাদের আত্মপচিয় এবং বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদ’ বলে। আমি ঐতিহাসিক ভাবে আমাদের দেশসত্তার পরিচয় দেবার চেষ্টা করেছি এবং ‘বাংলাদেশী’ কথাটির ভৌগলিক, তাত্ত্বিক ,রাজনৈতিক এবং আদর্শগত ব্যাখ্যা উপস্থিত করবার চেষ্টা করছি।
বাংলাদেশ সংস্কৃতি কমিশনের সভাপতি আমি ছিলাম। উক্ত কমিশনের রিপোর্টের বিস্কৃত ভূমিকাটি আমার লিখিত। উক্ত ভূমিকাটি বর্তমান গ্রন্থের প্রথম প্রবন্ধ হিসেবে মুদ্রিত হল। গ্রন্থের একটি প্রবন্ধ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইন্সটিটিউট অব বাংলাদেশ স্টাডিজের একটি সেমিনারে পঠিত হয়েছিল। ইন্সটিটিউট কর্তৃক প্রকাশিত ‘বাঙালীর আত্মপরিচয়’ গ্রন্থে সন্নিবেশিত হয়েছে। প্রবন্ধটি ঢাকা বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় ও মুদ্রিত হয়েছে। সৈয়দ আলী আহসান