আলালের ঘরের দুলাল

৳ 120.00

লেখক
প্রকাশক
আইএসবিএন
(ISBN)
9848484280
ভাষা বাংলা
পৃষ্ঠার সংখ্যা ৯৫
সংস্কার 1st Published, 2013
দেশ বাংলাদেশ

ভূমিকা
মধ্যযুগের বাংলা সাহিত্য দেব-দেবী নির্ভর গাঁথাকাব্যের সীমায় আবদ্ধ ছিল। সহিত্য চর্চার এ ধারা ভেঙ্গে বাঙলা সাহিত্য আধুনিকতার ছোঁয়ায় জেগে উঠে উনিশ শতকের প্রথমভাগে। এ সময় পাশ্চাত্যের রেনেসাঁ-উত্তর প্রভাব বাংলা সাহিত্যাঙ্গনে প্রবেশ করে বাংলা সাহিত্যকে আদুনিকতার দিকে এগিয়ে নিয়ে যায়। ঊনিশ শতকের প্রথমভাগ তাই বাংলা সাহিত্যের আধুনিকতার সূচনাকাল। মধ্যযুগের দেব-দেবী , ধর্ম বিশ্বাস, ঈশ্বর বন্দনা ইত্যাদির বদলে মানুষের চিরচেনা সেই গাঁথাকাব্য ধারায় আধুনিকতার এ নতুন ধারা প্রকাশ করা অসম্ভব হয়ে পড়ায় বাংলা সাহিত্যের শিল্পরূপ বাঁক নেয় নতুন পথে। সৃষ্টি হতে থাকে বাংলা সাহিত্যের নতুন নতুন শিল্পশাখা। পদ্যভাষায় সেসব হলো-মহাকাব্য , অমিত্রাক্ষর ছন্দ, সনেট, গীতিকবিতা, গীতিনাট্য ইত্যাদি। আর গদ্যভাষার স্বরূপতা অবিহিত হয় ছোটগল্প, প্রবন্ধ, নাটক, উপন্যাস ইত্যাদি নামে।

প্যারীচাঁদ মিত্র কলকাতায় ১৮১৪ সালের ২২শে জুলাই এক বণিক পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম রামনারায়ণ মিত্র। তিনি কাগজ ও হুন্ডি ব্যবসায়ী ছিলেন। প্যারীচাঁদ মিত্র বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী ছিলেন। শৈশবে একজন গুরুমহাশয়ের নিকট বাংলা, পরে একজন মুনশির নিকট ফারসি শিখেন। ইংরেজি লাভের জন্য হিন্দু কলেজে একাদশ শ্রেণীতে ভর্তি হয়েছিলেন। ঐ সময় ডিরোজিও নামে একজন বিখ্যাত অধ্যাপক ছিলেন হিন্দু কলেজে। তিনি তাঁর শিষ্য ও ভাবশিষ্য ছিলেন। তিনি বাংলার নবজাগরণের অন্যতম নেতা ছিলেন। তিনি ক্যালকাটা পাবলিক লাইব্রেরির লাইব্রেরিয়ান ছিলেন। তিনি ফার্সি, বাংলা ও ইংরেজি ভালো জানতেন। বিশেষ করে বাংলা ও ইংরেজি ভাষায় বহু গ্রন্থ রচনা করে তিনি খ্যাতি অর্জন করেছিলেন। তিনি মহিলাদের জন্য একটি মাসিক পত্রিকা সম্পাদনা করেন। তাঁর সহযোগী ছিলো রাধানাথ শিকদার। তিনি এছাড়াও জনকল্যাণ মূলক কাজও করতেন। তিনি কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেটের সদস্য ছিলেন। তিনি পশু-ক্লেশ নিবারণী সভারও সদস্য ছিলেন। বেথুন সোসাইটি ও ব্রিটিশ ইন্ডিয়া সোসাইটির অন্যতম উদ্যোক্তা ছিলেন প্যারীচাঁদ মিত্র। জ্ঞানান্বেষণ সভার সদস্য হন তিনি ১৮৩৮ সালে। তাঁর ইংরেজি ভাষায় রচিত লেখাসমূহ ছাপা হত ইংলিশম্যান, ইন্ডিয়ান ফিল্ড, ক্যালকাটা রিভিউ, হিন্দু প্যাট্রিয়ট, ফ্রেন্ড অফ ইন্ডিয়া প্রভৃতি পত্রিকায়। তিনি পুলিশি অত্যাচারিতার বিরুদ্ধে লড়েছিলেন এবং সফলকামও হয়েছিলেন। তিনি স্ত্রী শিক্ষা প্রচারে যথেষ্ট সক্রিয়তার পরিচয় দেন। তিনি বিধবাবিবাহ সমর্থন করতেন। তিনি বাল্যবিবাহ এবং বহুবিবাহের বিরোধিতা করেন। তিনি আমদানি ও রফতানি এবং চালের ব্যবসা করে প্রচুর অর্থোপার্জন করেন। আলালের ঘরের দুলাল (তাঁর শ্রেষ্ঠ এবং বাংলা সাহিত্যের প্রথম উপন্যাস)। ১৮৫৮ খ্রি. প্রকাশিত এই উপন্যাসটির অন্যতম প্রধান চরিত্র ঠকচাচা । উল্লেখ্য যে এখানে তিনি যে কথ্য ভাষা ব্যবহার করেছিলেন তা আলালী ভাষা নামে পরিচিতি লাভ করেছে। এই গ্রন্থটি ইংরেজিতেও অনুবাদ করা হয়েছিল The spoiled child নামে। ১৮৮৩ সালের ২৩শে নভেম্বর তিনি কলকাতায় মারা যান।


বই সম্পর্কে কোন জিজ্ঞাসা বা মতামত থাকলে আমাদেরকে জানান
শেয়ার করুন

লেখকের অন্য বইসমূহ