ইউরােপ থেকে সকলেই দাদাকে আমন্ত্রণ জানিয়ে সেখানে যাওয়ার জন্যে বারবার তাগিদ দিতে লাগলেন। কিন্তু যাবেন কীভাবে? দাদার তাে পাসপাের্ট নেই। উপায় একসময় বের হয়ে গেল। কয়েক বছর আগে প্রতিরােধ যােদ্ধা গৌড় গােপাল সাহা ভারত সরকারের কাছ থেকে একটি ট্র্যাভেল ডকুমেন্ট গ্রহণ করেছিলেন। যদিও সেটা কখনাে ব্যবহার করেননি। দাদা সেটা নিয়ে বিদেশ মন্ত্রণালয়ের শাখা সচিবালয়ের পরিচালক শ্রী দেব্ৰত ব্যানার্জিকে দেখালেন। ব্যানার্জিদাও কিছুদিন ধরে দাদার বিদেশ সফরের উপায় বের করতে উঠেপড়ে লেগেছিলেন। কিন্তু কোনাে সুরাহা করতে পারছিলেন না। হাতেনাতে নমুনা পেয়ে দিল্লির সাউথ ব্লকে চিঠি পাঠালেন। ওদিকের সম্মতি পেয়ে দাদার জন্য নির্ধারিত ফরম পূরণ করে বিদেশ মন্ত্রণালয়ের সুপারিশসহ পাসপাের্ট অফিসে পাঠিয়ে দিলেন।
এপ্রিল মাসের (১৯৮৯) দ্বিতীয় সপ্তাহে দাদা বালিগঞ্জের বিদেশ মন্ত্রণালয়ে এসে ট্র্যাভেল ডকুমেন্ট পেয়ে যেন অনেকটা আকাশের চাঁদ হাতে পেলেন। দাদা অতটা আনন্দিত হয়েছিলেন একমাত্র দীপের জন্ম সংবাদে এবং তৃতীয়বার কুঁড়ির জন্মের খবর পাওয়ার পর। তখন কিছুই বললেন না। আমি জানিও না। বর্ধমানে ফিরে এসে ডকুমেন্ট বের করে আমার হাতে দিয়ে তবে সুখবরটি বললেন। পাসপাের্টের আদলে তৈরি Identity certificate টি দেখে বুঝলাম, ভারতে রাজনৈতিক আশ্রয়ে বসবাসরতদের জন্যে দীর্ঘদিন ধরে এসব ব্যবস্থা করে রাখা হয়েছে। ভেতরের সবকিছু পাসপাের্টের আঙ্গিকে সাজানাে। নামধাম, ছবি, স্থায়ী অস্থায়ী ঠিকানা, অন্যান্য আনুষঙ্গিক তথ্য সবকিছুই অবিকল পাসপাের্টের মতাে। শুধু সাধারণ নাগরিকদের মতাে নিয়মিত পাসপাের্ট নয়। একটি বিশেষ ধরনের পাসপোের্ট।