“সমগ্র ডোডো-তাতাই” বইটির প্রথমের কিছু অংশঃ
ডােডাে-তাতাই রচনামালা শুরু হয়েছিলাে সেই উনিশশাে একাত্তর সালে। বাংলাদেশ যুদ্ধের বছর সেটা, দেশ থেকে আমার নিকট-জনেরা ঘরছাড়া হয়ে চলে এসেছিলো কলকাতায় আমার কাছে । তখন আমার ছোেট বসা, সামান্য চাকরি । খুবই টানাটানিতে, অর্থকষ্টে পড়েছিলাম। শক্তি চট্টোপাধ্যায় দয়া করলেন । শক্তি তখন দৈনিক আনন্দবাজারের সােমবারের শেষ পাতা আনন্দমেলার দেখাশােনা করেন।
নিতান্ত অর্থের জন্যে ডােডাে-তাতাই লিখেছিলাম, সপ্তাহান্তে বােধহয় পনেরাে টাকা, কিন্তু তখন তারও দাম আমার কাছে অনেক, বাজারদরও অনেক সস্তা ছিলাে। পরে যখন মাসিক ‘আনন্দমেলা’ প্রকাশ হলাে—কবি নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী সম্পাদক, তিনি আমাকে আবার ডােডাে-তাতাই লিখতে বললেন। এতে একটু বৈচিত্র্য ছিলাে এই যে আমার লেখার সঙ্গে তাতাইয়ের আঁকা ছবি, রচনার ওপরে লেখা থাকতাে :
লেখা : তারাপদ রায় (৪০ বছর) রেখা : কৃত্তিবাস রায় (১০ বছর)। যতদূর মনে আছে, উনিশশাে পঁচাত্তর সালে আরম্ভ হয়ে মাসিক ‘আনন্দমেলা’য় সাতাত্তর সাল পর্যন্ত দ্বিতীয় দফায় ডােডাে-তাতাই লিখেছিলাম।
ডােডােবাবু-তাতাইবাবুকে শিশুদের পছন্দ হয়েছিলাে । বােধহয় তাদের অভিভাবকদেরও ; এতদিন পরেও সেটা টের পাই । মাঝে-মধ্যে ঘরে-বাইরে, রাস্তাঘাটে দেখি নতুন প্রজন্মের শিশু, তাকেও ডােডাে কিংবা তাতাই বলে সম্বােধন . করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে ডােডাে এবং তাতাই কিন্তু বড় হয়ে গেছে । রীতিমতাে বড় । এই বড় হওয়ার সময়ে তারা দুজনেই ডােডাে-তাতাই রচনায় বিশেষ বাধা সৃষ্টি করেছিলাে। আর কেনই বা করবে না ? কেউ কি চায় যে তার নামে সপ্তাহের পর সপ্তাহ, মাসের পর মাস যা নয় তাই লেখা হােক ! | তবু এরমধ্যেই কখনাে-সখনাে ডােডাে-তাতাইকে নিয়ে আর কিছুই যে লিখিনি তা নয় । এদিক-ওদিকে দু’চারটি গল্প, এক-আধটি কৌতুকনাটিকা, প্রধানত শারদীয় ‘আনন্দমেলা’য় বেশ কয়েক বছর লিখেছিলাম। এখন আর তাও অবশ্য লিখি না।
ডােডাে-তাতাইকে নিয়ে লেখা এই রচনাগুলাে দিয়ে বেশ কয়েকটি বই হয়েছিলাে ;