যিরূশালেমকে কেন্দ্র করে “অভিশপ্ত নগরী” উপন্যাসের কাহিনী গড়ে উঠেছে। কিন্তু এর কেন্দ্রীয় বিষয়বস্তুতে রয়েছে ইহুদী জাতির পতনের সময়কার তার সমাজব্যবস্থা, ধর্ম, রাজতন্ত্র এবং সর্বোপরি রাজতন্ত্র ও পুরোহিততন্ত্রের মধ্যে বিরোধের নিগূঢ় ভাষ্য। ইহুদী জাতি কালের আক্রমণে ছিন্নবিচ্ছিন্ন হয়ে দেশে দেশে সমুদ্রের মধ্যে ক্ষুদ্র দ্বীপের মত এক স্বতন্ত্র জগৎ গড়ে তুলেছে। বস্তুত ইহুদীদের ঐ দ্বৈপায়ন চরিত্র অনুধাবন তাবৎ বাইবেলের নির্যাসকে আত্মস্ত করা থেকেই সম্ভব। উপন্যাসের চরিত্র চিত্রণে এখানেই লেখকের কৃতিত্ব। “অভিশপ্ত নগরী” যিরূশালেমের পতনের ওপর দাঁড়িয়ে শুধু একখানি ঐতিহাসিক উপন্যাস নয়। এখানে ইহুদী সমাজের ধারাবাহিক ট্র্যাজেডির পেছনে সমাজের কোন কোন শক্তি কিভাবে কাজ করেছে; রাজতন্ত্র ও পুরোহিততন্ত্রের মধ্যে ক্ষশতার দ্বন্দ্ব; ধর্মের আচার অনুষ্ঠানসর্বস্ব অন্তঃসারহীনতার বিরুদ্ধে বিবেকের বিদ্রোহ-এখানে যা নবী যেরেমিয়ার প্রত্যাদেশে উচ্চারিত; সংক্ষেপে রাজতন্ত্র, পুরোহিততন্ত্র ও নবী-এই ত্রিমুখী সংঘাত ইহুদী সমাজের বৈশিষ্ট্য-তার নিখুঁত বিশ্লেষণ এখানে সমুপস্থিত।